ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ: মির্জা ফখরুল নয়াপল্টনে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশবাসীর কাছ থেকে তাদের ভোটারধিকার আর নাগরিক মর্যাদাই ছিনিয়ে নেয়নি, তাদের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-শান্তিও আজ একের পর এক কেড়ে চলেছে। রাজনৈতিক সংকট, পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি, গুম, খুন, ধর্ষণের ঘটনায় গোটা দেশ যখন গণতন্ত্র ও আইনবিহীন হয়ে পড়েছে, তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

টিসিবি ও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের তথ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকার পরিচালনার দায়িত্বে ছিল।

সেই সময়ের পণ্যমূল্য ও বর্তমান বাজার মূল্যের একটি তুলনামূলক চিত্র আমি তুলে ধরতে চাই। বিএনপির সময়ে মোটা চালের দাম ছিল ১৭ টাকা, যার বর্তমান মূল্য ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। সরু চাল ছিল ২৪ টাকা, যা এখন ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। পেঁয়াজ ছিল আট থেকে ২০ টাকা, সেটা এখন ২৪০ টাকা। সয়াবিন তেল ছিল ৫৫ টাকা লিটার, বর্তমানে ৯৫ থেকে ১১০ টাকা। গরুর মাংস ছিল ১৫০ টাকা, এখন ৫৫০ টাকা। খাসির মাংস ২৩০ টাকা ছিল, বর্তমানে ৮০০ টাকা। ইলিশ মাছ ছিল প্রতিকেজি ২৮০ টাকা বড় সাইজ, যা বর্তমানে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা।  গুঁড়োদুধ ২৮৫ থেকে ৩৪৫ টাকা ছিল, যা এখন ৬১০ থেকে ৬৩০। দেশি মশুর ডাল ৪৫ থেকে ৬০ টাকা ছিল, বর্তমানে ১০০ থেকে ১১০। ফার্মের মুরগির ডিম (প্রতি হালি) ১১ টাকা ছিল, বর্তমানে ৩৫ টাকা। দেশি মুরগির ডিম (প্রতি হালি) ১১ থেকে ১২ টাকা ছিল, বর্তমানে ৭২ টাকা।  হাসের ডিম ছিল ১২ টাকা হালি, এখন ৭০ টাকা। আলুর কেজি ছিল ছয় টাকা, এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
 
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দুর্মূল্য নিয়ে আমরা কথা বলেছি। দেশের সব গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিদিন রিপোর্ট বের হচ্ছে। পেঁয়াজের ঝাঁঝ এখন চাল, ডাল, লবণ, তেল, আদা, রসুন থেকে শুরু করে শীতকালীন সব সবজিতে সংক্রমিত হয়েছে। মোটকথা, দৈনন্দিন জীবনে রান্নার জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিষের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে।  
 
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে জনগণকে পেঁয়াজ খেতে নিষেধ করছে। তাহলে চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা, আটার দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে তারা এখন কী বলবে? ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিতে? রুটি খাওয়া বন্ধ করে দিতে? ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, সুতরাং তেল খাওয়াও কি বন্ধ করে দিতে হবে?
 
ফখরুল বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্যে বাড়লে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারের। জনগণ কী খাবে-কী খাবে না তা নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের না। এর ব্যত্যয় ঘটার কোনো সুযোগ নাই। এর ব্যত্যয় ঘটলে বুঝতে হবে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।

সরকার ও ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছার ওপরই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য নির্ভরশীল দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার সম্পর্ক রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে সরকার দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে-এটাই জনগণের দাবি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
এমএইচ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।