ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

বন্ধুত্বে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক থাকে, চুক্তির বিষয়ে কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৯
বন্ধুত্বে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক থাকে, চুক্তির বিষয়ে কাদের

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের চুক্তি নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বন্ধুত্বে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক থাকে। আমাদের পাওয়ার বিষয়টা অনেক বেশি।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমসায়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

‘প্রধানমন্ত্রী এবারের ভারত সফরে সবকিছু দিয়ে আসছেন, কিছু আনতে পারেননি’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের এমন দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়।

বন্ধুত্বে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক থাকে। আমরা তো এনেছি, সব দিয়ে ফেলেছি এরকম বিষয় তো নয়।

তিনি বলেন, আমরা যা এনেছি সেটা হলো- আমাদের পাওয়ার বিষয়টা অনেক বেশি। কারণ সীমান্ত সমস্যার সমাধান আমরাই করেছি। সীমান্ত চুক্তির যে বাস্তবায়ন তা ৬৮ বছর পর বাস্তবায়ন ও কার্যকর করতে পেরেছি। পৃথিবীর কোনো দেশে ছিটমহল হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে করা হয়নি। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে তা করা হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সমাধান নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সমুদ্রসীমার বিষয়ে ভারত আপিল করেনি, তারা তো করতে পারতো। সম্পর্কটা ভালো থাকলে সব কিছুই পাওয়া যায়। সম্পর্কটা বৈরীতার মধ্যে থাকলে কিছুই পাওয়া যায় না।

তিস্তা চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই হবে-জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্পর্ক ভালো থাকলে এ চুক্তি সময়ের ব্যাপার। গঙ্গা চুক্তি শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে। তিস্তা চুক্তিও শেখ হাসিনার আমলেই হবে, ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে আলোচনা অগ্রগতি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এ চুক্তি সম্পাদন হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের ইন্টারনাল একটা সমস্যা আছে আপানারা জানেন। যেহেতু এটি পশ্চিমবঙ্গের বিষয়, পশ্চিমবঙ্গের যে সরকার সেই সরকার ফেডারেল সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে। সেখানে তাদের মধ্যে ঐক্যমতের ব্যাপার আছে, বোঝা-পড়ার ব্যাপার আছে, ইন্টারনাল প্রবলেম হচ্ছে। এখানে ভারত সরকারের সদিচ্ছা বা আন্তরিকতার কমতি আছে এটা মনে হয় না।

‘ভবিষ্যতে দেখতে থাকুন’

‘যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা’- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, প্রশ্ন হতে পারে। তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণের আগে তো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা তা ক্রমান্বয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।  

‘এসব ব্যাপারে উচ্চাসন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে নির্দেশনা মান্য করে চলি এবং কার্যকর করার জন্য আমার রোল আমি প্লে করি। এখানে নির্দেশনা দেওয়ার মালিক আমি নই। ’

ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কিনা- প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, যা হয়েছে সেটাই দেখুন, দেখতে থাকুন, ভবিষ্যতে কী হবে সেটাও দেখতে থাকুন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, অভিযোগ যার বিরুদ্ধে আসুক, প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ রেহাই পাবে না। তথ্য প্রমাণ না হলে একজনকে কিভাবে অভিযুক্ত করবেন। রাশেদ খান মেননও একটা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট। তাই বলে তাকেও কী বলবেন, তিনিও ক্যাসিনো ব্যবসায়ী?

যুবলীগ নিয়ে আগামী পরিকল্পনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, যুবলীগ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা- সম্মেলন হবে, চারটি সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তাই সম্মেলন হবে। নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলনের কাজ শেষ হবে। তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং যতদূর জানি তারা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নেত্রীর কাছে তারা সময় চেয়েছেন।

যুবলীগের নেতৃত্বে বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বসয়সীমা তাদের কনস্টিটিউশনে আছে, সেটি যাতে ফলো করা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

যুবলীগের নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসছে কিনা- জানতে চাইলে কাদের বলেন, সেটা তো আমি বলতে পারি না। কাউন্সিলরা কী করবে, পরিবর্তন করবে কিনা, নেত্রীর মাইন্ডসেট পরিবর্তন করবেন কিনা, তিনি পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই পরিবর্তন করবে।

ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম আসলেও অনেক পরে যুবলীগের ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতারের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে ‘নাটক’ দাবি করা নিয়ে কাদের বলেন, এটি কী হাস্যকর মনে হয় না? বাংলাদেশ সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সেটার সঙ্গে সম্পর্ক কী, এই যোগসূত্রটা তারা কোথা থেকে আবিষ্কার করলেন, এ রহস্যটা কি? আমি জানতে চাই?

তিনি বলেন, গ্রেফতারে কী কারণে বিলম্ব হয়েছে র‌্যাবের ডিজি নিজে সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন বাংলাদেশে শেষ পর্যন্ত কেউ রেহাই পায় না। কিন্তু পালিয়ে থাকার চেষ্টা করলে বা চাইলে ঢাকা এতবড় সিটি, কিন্তু ফলপ্রসু হয় না। র‌্যাবের ডিজি তো বলেছেনই, সে বাইরে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছিল, তাই সীমান্তের কাছাকাছি ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।