ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

সাজা দেওয়া মামলায় খালেদার সম্পৃক্ততা নেই: ড. মোশাররফ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
সাজা দেওয়া মামলায় খালেদার সম্পৃক্ততা নেই: ড. মোশাররফ সমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতারা, ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট থেকে: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, যে মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটাতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। দুই কোটি থেকে একটি টাকাও উঠানো হয়নি। সেই টাকা এখন সুদে আসলে ছয় কোটি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি করেন।

ড. মোশাররফ বলেন, এই সরকার বিএনপিকে ভয় পায়।

খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। আওয়ামী লীগ ৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। আবার ২৯ ডিসেম্বর রাতে দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে। সেজন্য এই সরকার জনগণের নয়। এই সরকার লুটেরাদের। ডাকাতদের সরকার। চাঁদাবাজদের সরকার। চাঁদাবাজি করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ব্যাংক লুট করেছে। চাঁদাবাজি লুটতরাজ এমন পর্যায়ে পৌছেছে, গত সাতদিনে যা দেখলাম, সরকারের ভেতর থেকে কালো বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, যুবলীগের সামান্য একজন সমাজকল্যাণ সম্পাদকের বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া এ ধরনের ক্যাসিনো জুয়া চলতে পারে না। আমরা তাদের নাম জানতে চাই। কারা এর সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুন>> আন্দোলনের প্রস্তুতি নেন: নেতাকর্মীদের মির্জা ফখরুল

মোশাররফ বলেন, আজকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এক সুতায় গাঁথা। আসুন গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এক সঙ্গে আন্দোলন করি।

বিএনপির অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকার অসাংবিধানিক। সংবিধানে নির্বাচন বলতে যা বুঝায়, গত ৩০ ডিসেম্বর তা হয়নি। ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ মিলে এই নির্বাচন করেছে। সেজন্য জবাবদিহিহীন একটি সরকারের যা হয়, তাই হয়েছে।

তিনি বলেন, যুবলীগের নেতার ২০০ কোটি টাকার এফডিআর আছে। অথচ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজানো মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে; মাত্র দুই কোটি টাকার জন্য। তাহলে এদের ৫০০ বছর সাজা হওয়া দরকার। একটা ভুয়া মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে। নিশ্চয় তিনি বের হয়ে আসবেন। তার মুক্তির একমাত্র পথ হলো রাজপথ। এই রাজপথে যাওয়ার জন্য আপনাদের প্রস্তুত হতে হবে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।  গণতন্ত্র মানে হলো খালেদা জিয়া। সরকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। সবপর্যায়ে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে শিক্ষার্থীরা চায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর ও গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে। দেশের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। এ কারণে সরকারের উচিত হবে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যেখানে যাই সেখানে একটি কথাই শুনি, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। দেশের প্রতিটি মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। আপনারা জানেন একটি কারণে খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না। আর সেই কারণটি হলো শেখ হাসিনা। তাকে ক্ষমতায় রেখে কীভাবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবেন। তাই সহজ পথ শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলন শুরু করেন।

গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়া অবশ্যই মুক্তি পাবেন। কিন্তু সেই মুক্তি শেখ হাসিনা দিতে পারবেন না। তার আগে শেখ হাসিনার পতন হবে।

তিনি বলেন, আজকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে গেল কীভাবে। লুট করতে করতে অর্থনীতি শেষ সীমানায় নিয়ে গেছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছেন না। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুদ্ধি অভিযান চলছে। আমি বলবো আরও অনেক আছে। শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যে তিনজন ধরা পড়েছেন, তারা যাদের নাম বলেছেন, তাদের নাম প্রকাশ করেন। জাতি তাদের নাম জানতে চায়।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকীর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন সেলিম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গউছ, নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক,  ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, হুমায়ুন কবীর, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এছাড়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খানসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী যোগ দেন সমাবেশে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
এমএইচ/এনইউ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।