ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

আন্দোলনের প্রস্তুতি নেন: নেতাকর্মীদের মির্জা ফখরুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
আন্দোলনের প্রস্তুতি নেন: নেতাকর্মীদের মির্জা ফখরুল সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট থেকে: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনবিরোধী সরকার। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা দেশের সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। এই লুটেরা সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমি বলছি, আপনারা যদি খালেদা জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হন।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল রাত থেকে তিনবার মঞ্চ ভাঙা হয়েছে।

তারপরও সিলেটের মানুষের সাহসিকতার ফলে এই জনসভা হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আজকে এই সভা করছি। এই সভা ব্যর্থ করতে গতরাতে ১৬ জনকে বন্দি করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে সিলেটে ছাত্রদল একটি মিছিল করেছিল, সেই মিছিলে হাজার হাজার ছাত্ররা যোগ দিয়েছিল, সেজন্য ভয় থেকে গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ সমাবেশ করতে না দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। আসলে তারা জনগণকেই ভয় পায়।

এই সরকার বৈধ নয় দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা আগের দিন রাতে ভোট চুরি-ডাকাতি করেছে। বন্দুকের জোরে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। সেজন্য আমরা এই সরকারকে অবৈধ সরকার বলি।

তিনি বলেন, এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একটা গৃহপালিত বিরোধীদল বানিয়েছে। সরকার হা বললে হা বলে, না বললে না বলে।

বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থাকে তারা রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। প্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করেছে।

মহাসচিব বলেন, ক্যাসিনো অভিযানে যে-ই ধরা পড়ছে, তাকেই বলা হচ্ছে বিএনপির লোক। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেছেন, তার নেতাকর্মীরা অপকর্ম করেছেন, পুলিশ প্রশাসন ১২ বছর কী করছিল।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারের প্রতিপক্ষ এখন জনগণ। বিগত নির্বাচনে আমাদের একজন ভোটারও ভোট দিতে পারেননি। অথচ সংবিধানে লেখা আছে জনগণ ক্ষমতার মালিক। আপনারা ভোট দিতে পেরেছেন? শুধু আজকে না, স্বাধীনতার পরেও একই কায়দায় ভোট কেড়ে নিয়েছিল। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। করে না বলেই একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। তাদের দুঃশাসনে সেদিন দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।

ইলিয়াস আলী ছয় বছর ধরে নিখোঁজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ইলিয়াস আলীর বাসায় গিয়েছিলাম। আমরা তাকে খুঁজে বের করতে পারিনি। আজকে শত শত পরিবার স্বজন হারানোর বেদনায় বেদনার্ত। তাদের পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে যখন বসি, তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। একজন নয়, দুজন নয় ৫০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এক লাখের ওপরে মামলায় ২৬ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এরা জনগণের সরকার নয়। এরা গণবিরোধী সরকার। তারা বড়াই করে বলে বাংলাদেশ না-কি উন্নয়নের রোল মডেল। অথচ এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনোর জোয়ার বইছে।

‘সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াছে। বিদেশি কেউ বিনিয়োগ করছে না। কারণ এটা একটা লুটেরা দেশ। তারা মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট করছে। ’

১১ লাখ রোহিঙ্গা দুই বছর হয়ে গেল, একজনকেও ফেরত পাঠাতে পারল না। তাদের কূটনৈতিক তৎপরতা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব এখন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বিরোধীদলের সাহায্য চাচ্ছেন। আমরাতো আগেই সাহায্য দিতে চেয়েছিলাম।    

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, জিকে গউছ, আব্দুর রাজ্জাক, নাসিম হোসাইন, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, হুমায়ুন কবীর, মোরতাজুল করিম বাদরু, হাসান জাফির তুহিন, মামুন হাসান, আবুল কালাম আজাদ, মীর হেলাল উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী।

সমাবেশে সিলেট মহানগর, সিলেট জেলা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
এমএইচ/এনইউ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad