ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

শুদ্ধি অভিযানে জনসমর্থন, বাড়ছে সরকারের ইমেজ 

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
শুদ্ধি অভিযানে জনসমর্থন, বাড়ছে সরকারের ইমেজ 

ঢাকা: ক্যাসিনো পরিচালনাসহ চাঁদাবাজি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানে দেশের মানুষ সমর্থন দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। এতে জনগণের কাছে সরকার ও আওয়ামী লীগের ইমেজ আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী দেশ ছাড়ার আগে তার অনুপস্থিতিতেও যেন অভিযান ঠিকঠাক চলে সে বিষয়ে দিয়ে গেছে কড়া নির্দেশনা।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মীর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ অপকর্মের বিষয়ে আলোচনায় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

অপকর্মের সঙ্গে জাকিড়তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়।

এরপরই গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বিভিন্ন ক্লাবে পরিচালিত ক্যাসিনোসহ অপকর্মের হোতাদের অফিস ও বাসায় অভিযান শুরু করে। এর মধ্য দিয়ে গোপনে পরিচালিত ক্যাসিনোর সন্ধান বেরিয়ে আসছে একের পর এক। ইতোমধ্যেই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন প্রভাশালী নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নজরদারিতে অনেকেই।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোকের অপকর্মের কারণে সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। এদের অপকর্মের দায় বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের উপর এসে পড়ে। এই অভিযানে কাউকে ছাড়া হচ্ছে না, সে দলের হোক আর দলের ছত্রছায়ায় থেকে করুক। ফলে এই অভিযান জনগণ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। এতে জনগণের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বাড়ছে।

ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে এই অ্যাকশনের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেছে। যত বড় নেতাই হোক, যত প্রভাবশালীই হোক কেউ ছাড় পাবে না। সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এটা ইতিবাচক। কিন্তু শুধু ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানই নয়, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা যেন পার পেয়ে না যায়। পাশাপাশি এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিলে সরকার ও আওয়ামী লীগ আরও জনসমর্থন পাবে।  
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক যাওয়ার আগে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় কথা বলেছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে যারাই অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের রক্ষার জন্য কোনো রকম তদবির যেন কেউ না করে। যে তদবির করবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন সময় অনেকেই আমাদের কাছে এসব অপকর্মের ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন। এই অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা জনগণ খুব ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেওয়ায় সরকার ও আওয়ামী লীগের ইমেজ আরও বেড়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বাংলানিউজকে বলেন, যে কাজটা শুরু করা হয়েছে এটা সরকারের দায়িত্ব। এতে সরকারের উপর মানুষ খুশি হয়েছে। শুধু অপকর্মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তারাই নয়, যারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের মদদদাতা কারা তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। অবৈধ অস্ত্র কোথা থেকে এলো, কারা সহযোগিতা করলো তাদেরও খুঁজে বের করে সবাইকে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
এসকে/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।