ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

আ’লীগের ব্যর্থতায় বিএনপির জন্ম: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
আ’লীগের ব্যর্থতায় বিএনপির জন্ম: ফখরুল

ঢাকা: আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণেই বিএনপির জন্ম হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির জন্ম এমন একটি রাজনৈতিক শূন্যতার সময়ে হয়েছিল, যা সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। সেই কারণেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজকে আমরা আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, যে নির্বাচন আপনারা চুরি করে নিয়ে গেছেন সেই নির্বাচন বাতিল করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের মিলনায়তনে বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, অন্যায়-নির্যাতন-নিপীড়ন করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। মানবসভ্যতার ইতিহাসে কেউ টিকে থাকতে পারেনি। না পেরেছে নমরুদ, না ফেরাউন, না হিটলার, না মুসোলিনী, না আইউব খান, না এরশাদ। এরাও টিকতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ চিরকাল সংগ্রাম-লড়াই করে তাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে। আজকেও তারা লড়াই-সংগ্রাম করে তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।

সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ জানিয়ে ফখরুল বলেন, তারা ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে আমরা নাকি রোহিঙ্গাদের যেতে বাধা দিচ্ছি। তাদের ব্যর্থতা ঢাকতেই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে রোহিঙ্গাদের অতি অল্প সময়ে ফেরাতে সক্ষম হয়েছিলেন। অথচ এই সরকার দুইবার চেষ্টা করেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরাতে পারেনি। অথচ তারা বলে চীনের সঙ্গে তাদের নাকি সম্পর্ক সুউচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ভারতের সঙ্গে নাকি এরচেয়েও বেশি। তাহলে কী হলো? আজকে ভারত কি অবস্থান নিয়েছে? চীন কি অবস্থান নিয়েছে? আজকে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে পাঠানো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু এই সরকার সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়ে গেছে। সেজন্যই আজকে বিএনপির প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি।

তিনি আরও বলেন, গতকালও আমি খবর নিয়ে জেনেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অত্যান্ত অসুস্থ। তিনি এখন হাঁটতে পারেন না। তার সুগার কমছে না। এ অবস্থায়তেও তিনি মাথা নত করেননি। তিনি বার বার একই কথা বলছেন, এই অন্যায়ের বিচার হবে। অন্যায়কারীরা টিকবে না। জনগণ নিশ্চয়ই উঠে দাঁড়াবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, আজকে দুঃখ হয়, কষ্ট হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আওয়ামী লীগেরও দাবি ছিল।  অথচ জনগণের সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রতারণা করে ২০১২ সালে তারাই তাদের সুবিধামতো সংবিধান পরিবর্তন করে নিয়েছে। কারণ তারা জানে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা কোনোদিনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, আসুন এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে আমরা শপথ নেই, আমরা বিএনপিকে সুসংগঠিত করবো। আমাদের দল ইতোমধ্যে সুসংগঠিত হতে শুরু করেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার অসাধারণ দক্ষতা দিয়ে ইতোমধ্যে দলকে সংগঠিত করতে শুরু করেছেন।  

‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের দল সম্পূর্ণভাবে সংগঠিত হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আমরা অবশ্যই এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব। আসুন আজকে শপথ নেই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে তবেই আমরা ঘরে ফিরে যাব। ’
  
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দেশে অত্যন্ত সংকটময় সময় যাচ্ছে। এটি বিশেষ কোনো সময় নয়। আর অল্প কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তাদের পতন অবসম্ভাবী। এদেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। অধিকার আদায়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে। সরকার ক্ষমতায় আছে ঠিকই, কিন্তু তারা সবাই জানে যে, একটি দুর্বল ভিত্তির ওপরও তারা দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করা সম্ভব নয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।

তবে এলডিপির সভাপতি কর্নেল অব. অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম ও জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী অনুষ্ঠানে আসেনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এমএইচ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।