ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ডেঙ্গু চিকিৎসায় সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার দাবি বিএনপির

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৯
ডেঙ্গু চিকিৎসায় সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার দাবি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দেওয়ার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (০৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির এই দাবির কথা জানান।

তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব রাখছি, সরকার ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয়  ভর্তুকি দেবে এবং জনগণের জন্য ডেঙ্গু জ্বর বেসরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার এতো টাকা খরচ করতে পারে বিভিন্ন সেক্টরে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকা জমা হয়, সেটা দেখা যায় বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য চলে যায়; এমনকি তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের জন্য। কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষ যখন বিপদে পড়েছে, তখন তাদের জন্য এই অর্থ (ত্রাণ তহবিলের) ব্যবহার করাটা অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি। এছাড়া সরকারের উচিত হবে এ বিষয়ে আরও ত্রাণ যোগাড় করে সেখানে বিনামূল্যে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

ডেঙ্গু রোগীর ব্যাপকতার কারণে হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মহানগরীর কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কেন্দ্র স্থাপন করবেন। সেখান থেকে অনলাইনে ডেঙ্গু রোগীদের ডাক্তাররা পরামর্শ দেবেন।

ফখরুল বলেন, শুক্রবার (০২ আগস্ট) আমার একটা বক্তব্যে কনফিউশন তৈরি হয়েছে। জরুরি অবস্থার বিষয়টি। আসলে এটি ওইভাবে আমি ঠিক বলতে চাইনি। আমি যেটা বলতে চেয়েছি, তা হলো আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা। অর্থাৎ ডেঙ্গু একটা বড় রকমের সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেটা মোকাবিলায় আমি আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলাম। আসলে এটার মিনিংটা হচ্ছে, বড় আপদ বলে আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি কথাটা বলেছিলাম।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ যাওয়া এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বক্তব্য মিলে এটা একটা লেজে গোবরে পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছে সরকার। তারা এই সমস্যা সমাধান করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

‘এটা এখন এতো বড় আকার ধারণ করেছে যে, ৬৪ জেলায় চলে গেছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে ব্যবস্থা দরকার ছিল, সেটা সরকার নিতে পারেনি। অর্থাৎ মশা মারার জন্য যে ওষুধ, সেটা তারা আনতে পারেনি এবং এতো অল্প সময়ের মধ্যে আমদানি করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। ’

নিজের বাসা উত্তরায় মশার উপদ্রবের কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, আমি যে বাসায় থাকি, তার পাশেই একটা বড় পাকা ড্রেন আছে। যা আজ পর্যন্ত আমি দেখিনি পরিষ্কার করা হয়েছে। আর মশার ওষুধ যারা দেয়, তাদের গত দেড় মাস আমি দেখিনি। ঢাকা শহরে এই ব্যাপারটা সবাই জানে।

বন্যা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বন্যা পরবর্তী দুর্গতদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির নেতৃত্বে ড্যাব আক্রান্ত এলাকায় ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসাসেবা দেবে। একইসঙ্গে কৃষকদের কৃষি পুনর্বাসনের জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে কৃষক দল ও এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা থাকবেন।

নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট কার্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট কার্ডের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি। এটাকে বিশ্বব্যাংক কালো তালিকাভুক্ত করেছে দুর্নীতির কারণে। এই বিষয়টা জাতির কাছে একেবারে অস্পষ্ট। এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো কিছু জাতি জানে না। আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছ থেকে একটা পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দাবি করছি।

কয়েকটি গণমাধ্যমে খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সোদি আরব যাচ্ছেন- এই রকম সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবো না। এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আসলে প্যারোলের ব্যাপারে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। কোথাও কোনো চিঠিও দেয়া হয়নি। আমরা কোথাও কোনো কথাও বলিনি। সুতরাং এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না আমাদের দিক থেকে।

বিএনপি মহাসচিব এও বলেন, ঈদের পর খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন আরও বেগবান করার জন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলো দ্রুত শুরু করা হবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া লন্ডন থেকে স্কাইপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময় ২৩১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৯
এমএইচ/টিএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।