ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

ফখরুলের বক্তব্যই প্রমাণ করে বিচার বিভাগ স্বাধীন: হানিফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৯
ফখরুলের বক্তব্যই প্রমাণ করে বিচার বিভাগ স্বাধীন: হানিফ

ঢাকা: বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ বলেছেন, বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে এই অভিযোগটা যুক্তিযুক্ত নয়। বিশেষ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক সময় বলেছেন, সরকার বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। আর তিনি শুক্রবারই (২ আগস্ট) বলেছেন, দেশে কোনো সরকার আছে নাকি? এখন বিচার বিভাগ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়, সেটা সরকারকে বাস্তবায়ন করতে হয়। তার মানে বিচার ব্যবস্থা বা আদালত এখন সরকারের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা যে নির্দেশনা দিচ্ছে সেটাই সরকার পালন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাহলে বিচার ব্যবস্থা শুধু স্বাধীন নয়, তারা সরকারের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এটা মির্জা ফখরুলের কথায় প্রমাণিত হয়েছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা’ আয়োজিত ‘গুজব ও অপপ্রচার প্রতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।  

হানিফ বলেন, গুজব একটা অপপ্রচার।

এই অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায়। প্রত্যেকটা অপপ্রচারের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট কারণ বা লক্ষ্য আছে। এগুলো এমনিতে ছড়ায় না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কৌশলে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকের এই গোলটেবিল বৈঠকের মূল প্রবন্ধেই উল্লেখ করা হয়েছে- আমাদের দেশে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় থেকেই গুজব ছড়ানো হয়েছে। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে। ভারতে রামমন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছিল। সেটাও রাজনৈতিক কৌশল ছিল। রামুতে গুজব ছড়িয়ে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করা হয়েছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রস রাজকে কেন্দ্র করে প্রচার করা হলো। সেখানেও রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। অর্থাৎ সব গুজবের পেছনেই রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল।

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দিয়ে সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে পতন ঘটানো বা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্যই গুজব ছড়ানো হয় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আমরা বারবার দেখেছি। ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবও রাজনৈতিক লক্ষ্যে করানো হয়েছিল। সেই সময় নেপথ্যে থেকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা কীভাবে বৈঠক করেছিলেন, সেটাও পরে মিডিয়ায় এসেছে। এখনো যে গুজব হচ্ছে সেটাও রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে করা হচ্ছে।

গুজব থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে তিনি বলেন, আজকের বক্তা কাজল দেবনাথ বলেছেন; কথা বলতে না দিলে গুজব ছড়ায়। আমি বলতে চাই; কথা বলায়তো বাধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিনই তারা কথা বলছেন। বিভিন্ন টকশো, মিডিয়া, প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিদিন কথা বলছেন। কথা বলার ক্ষেত্রেতো সরকার বাধা দেয়নি। কথা বলার ক্ষেত্রে বাধা দিলে গুজব হতে পারে; এমন অভিযোগ তুলে বোধ হয় আমাদের প্রতি সুবিচার হচ্ছে না।

আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের সভাপতিত্বে ও প্রধান সমন্বয়ক এফএম শাহিনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মো. গোলাম কুদ্দুস, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বুদ্ধিষ্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা মাহবুব, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি কাজল দেবনাথ, ঢাবির উর্দু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা হুসাইনুল বান্না প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খায়ের মাহমুদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।