ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

আগের চেয়ে সুস্থ রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
আগের চেয়ে সুস্থ রিজভী নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভী

ঢাকা: টানা ১৬ মাস ধরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগের চেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ।

রোববার (৯ জুন) তিনি দলীয় কার্যালয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তার কঠিন পেট ব্যথা শুরু হয়।

পরে প্রচুর বমিও হয়। এরপর থেকে গত কয়েকদিন ধরেই তিনি স্যালাইন নিচ্ছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ আছে।

বুধবার  (১২ জুন) সন্ধ্যায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ জানান, গত কয়েকদিন পর আজ (বুধবার) কিছুটা সুস্থবোধ করছি। কয়েকদিনের মধ্যে আজকেই প্রথম বিকেলে পানি পান করেছি। গত কয়েকদিন ধরেই চিকিৎসকদের পরামর্শে সব ধরনের খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথা বলার সময় সেখানে রিজভী আহমেদকে দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি মিনিট পাঁচেক সময় রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। একই সময় তাকে দেখতে আসেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও তরুণ দলের সভাপতি ডা. আবু বকর সিদ্দিক।

বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ৬ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় দলের দাপ্তরিক কার্যালয়। সেখানে বিএনপির মহাসচিবের কক্ষ, সংবাদ সম্মেলন কক্ষ, দাপ্তরিক বিভাগ, একটি রান্নাঘর, তিনটি টয়লেটসহ মোট ৬টি কক্ষ আছে। এর মধ্যে রিজভী আহমেদ প্রায় সময়ই দপ্তর বিভাগের নিজের কক্ষে অবস্থান করেন। তাকে ঘিরে দিনের প্রায় সময়ই বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বেশকিছু নেতাকর্মী অবস্থান নিয়ে থাকে। রিজভী যেখানে বসে দাফতরিক কাজ করেন তার পেছনে (দক্ষিণে) একটি ছোট কক্ষে তিনি দিনে বিশ্রাম নেন আবার রাতে ঘুমান। বর্তমানে তিনি সেই ছোট্ট কক্ষে শুয়ে আছেন। হাতে চলছে স্যালাইন। পাশে বসে আছেন তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা আইভী।

রিজভী আহমেদ জানান, তার অসুস্থতা র্দীর্ঘদিনের। আশির দশকের শেষ দিকে স্বৈরাচার সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলি তার মেরুদণ্ড ভেদ করে যায়। সেই থেকেই তিনি কার্যত অসুস্থ।
 
তিনি জানান, গুলি লাগার কারণে তার খাবার হজমে সমস্যা হয়। খাবার তার খাদ্যনালীতে আটকে যায়। চিকিৎসকদের ভাষায় এ রোগের নাম সাব একিউট ইন্টেস্টেনাল অবস্ট্রাকশন।

ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৮৪ সালে রিজভী আহমেদের পেটে ও মেরুদণ্ডে গুলি লাগার কারণে তার মাঝে মধ্যেই ব্যান্ড এডিকশন সৃষ্টি হয়। এ কারণে তিনি প্রায়িই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি এ কারণে আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তিনি জানান, রিজভী আহমেদের যিনি অপারেশন করেছিলেন তিনি দেশের খুব সিনিয়র একজন চিকিৎসক অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন। এবারও আমরা ওনার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। তিনি এসে দেখেও গেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যে চিকিৎসা ওনাকে দিচ্ছি তা ঠিক আছে।

ডা. রফিক আরও বলেন, এই মুহূর্তে রিজভী আহমেদকে হাসপাতাল বা বাসায় নেওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি অসুস্থ হওয়ার পর আমরা তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বলতে পারেন একটি মিনি হসপিটাল বানিয়ে ফেলেছি। সেখানে তার যে চিকিৎসা প্রয়োজন তা চলছে। গত কয়েকদিন পর আজ আমরা তাকে কিছুটা ওরাল খাবার সাজেস্ট করেছি। তাকে পানি পান করতে দিয়েছি। আমরা দেখতে চেয়েছি, তার  সাব একিউট ইন্টেস্টেনাল অবস্ট্রাকশন কতটা কমেছে। কতটা কাজ করছে। এখন পর্যন্ত যা দেখতে পাচ্ছি তাতে আমরা সন্তুষ্ট। সে কারণে এই মুহূর্তে তাকে হাসপাতালে বা বাসায় নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
এমএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।