ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে অর্থ পাচারের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
দুর্নীতিবাজ কাউকেই ছাড়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করে হানিফ বলেন, ‘২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার সময়ে খালেদা জিয়া ১৮৫টি লাগেজ ভর্তি করে যে টাকা ও অর্থসম্পদ বিদেশে পাচার করেছিলেন সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ’
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি নূন্যতম দরদ থাকলে সৌদি আরবে যে সম্পদ পাচার করেছেন তা দেশে ফিরিয়ে আনুন। আপনার পুত্ররা মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে যে অর্থ পাচার করেছে তা ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিন। তাহলেই বোঝা যাবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি আপনার দরদ আছে। ’
এছাড়া আদালত খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্যারোল বাতিল করলে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও ঘোষণা দেন হানিফ।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৩ অক্টোবর কোকোর প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে শুনানি আছে। সেখানে যদি তার প্যারোল বাতিল হয় তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাই দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকার যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ’
এ সময় আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই বলেও বিরোধী দলকে সতর্ক করেন হানিফ।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও খালেদা জিয়ার দুই ছেলের দুর্নীতির বিচার বাধাগ্রস্ত করতে যদি কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হয় তবে আওয়ামী লীগ তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে। ’
জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ তুলেছে তার জবাবে হানিফ বলেন, ‘জিয়ার পরিবার তো এমনিতেই ধ্বংস হয়ে গেছে। জিয়ার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। তাদের ধ্বংস করার তো দরকার নেই। ’
বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান জনগণের চাপে শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ স্বাধীন না হলে জিয়া এদেশের সেনা প্রধান হতে পারতেন না। জিয়াউর রহমানকে রাজনীতি করার অধিকার আওয়ামী লীগই দিয়েছিল। জিয়া গণতান্ত্রিক হলে ৩ নভেম্বর মোশতাকের বিদায় নেওয়ার পর আরও কঠোর সামরিক শাসন জারি করতেন না। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় সদস্য সুজিত নন্দি রায়, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর্জা আজম, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১০