ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বগুড়ায় বিএনপির পাল্টাপাল্টি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
বগুড়ায় বিএনপির পাল্টাপাল্টি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা  বগুড়ায় বিএনপির পাল্টাপাল্টি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা । ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: দীর্ঘ আট বছর পর বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাথায় দলের সিনিয়র নেতারা পাল্টা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমানকে আহ্বায়ক ও দলের চারজন সিনিয়র নেতাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে পাল্টা এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
 
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু পাল্টা এ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।


 
এর আগে সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান শহরের রিয়াজ কাজী লেনের বাসায় সভায় দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সভা করেন। সভা শেষে সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির পাল্টা এ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।  
 
পাল্টা ঘোষিত এ কমিটিতে আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান ছাড়াও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে বিলুপ্ত জেলা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, আলী আজগর তালুকদার হেনা, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু ও ডা. শাহ মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর নাম ঘোষণা করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান।
 
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নির্দেশনা ছিল জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের  সঙ্গে পরামর্শ করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের। কিন্তু সিনিয়র নেতাদের পাশ কাটিয়ে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সাধারণ সভা করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল না। কিন্তু দলের সিনিয়রদের বাদ দিয়ে সেই কাজটি করা হয়েছে। তাই দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে পরামর্শ করে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক এ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো’।
 
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত পাঁচ সদস্যের এ কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবে পরামর্শ দেবেন সে অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।  
 
এদিকে ২৯ এপ্রিল বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা ভিপি সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং জয়নাল আবেদীন চাঁনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। তবে আহ্বায়ক কমিটির বাকি সদস্যদের নাম পরে ঘোষণা দেওয়া হবে।  
 
সকালে শহরের নবাববাড়ী রোডের জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আগের দুই বছর মেয়াদী কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়।
 
সভা শেষে দুপুরের দিকে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল জানান, সভায় উপস্থিত সদস্যদের কাছ থেকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কের নাম চাওয়া হলে তারা ভিপি সাইফুল ও চাঁন ছাড়া আর কারও নাম প্রস্তাব করেননি।
 
তাই ভেঙে দেওয়ার কমিটির সভাপতি ভিপি সাইফুলকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক চাঁনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪৫ সদস্য বিশিষ্টি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত এ আহ্বায়ক কমিটি বাকি সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করবেন এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন বলেও জানান নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য পাভেল।
 
এদিকে জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির ওই সভায় ভিপি সাইফুল বিরোধীরা অনুপস্থিত ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি বলছে, ৪৫ সদস্য বিশিষ্টি গঠিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বয়কট করা বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন সিনিয়র নেতার নেতৃত্বে পাল্টা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
সে অনুযায়ী তারা সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পাল্টা সভা ডেকেছেন দলের একজন সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায়। সভা শেষে সেখান থেকে পাল্টা আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা আসতে পারে বলে দলীয় সূত্রটি জানায়। তবে বিষয়টি নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের এ অংশটির কেউ আগাম মুখ খুলতে রাজি হননি।
 
তবে জেলা বিএনপি নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনা জানান, ‘আহ্বায়ক কমিটি গঠনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেটি মানা হয়নি। তারেক রহমান বলেছেন দলের সিনিয়র নেতারা সর্বসম্মতভাবে আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নাম কেন্দ্রে প্রস্তাব করবে।

কিন্তু সেটি না করে সাধারণ সভা ডেকে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার কোনো এখতিয়ার জেলার সদস্যদের নেই। তাই আমরা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বসে তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি যোগ করেন বিএনপির এ সিনিয়র নেতা।
 
অপরদিকে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় ১৭২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপির ৯৫ জন উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা উপস্থিত ছিলেন না।
 
এ প্রসঙ্গে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভিপি সাইফুল জানান, ১৭২ জন সদস্যের মধ্যে অন্তত ৫০ জন আর দলের সঙ্গে নেই। তাদের কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ নিষ্ক্রিয়ও হয়ে পড়েছেন। এছাড়া কারাগারে থাকার কারণেও অনেক সদস্য সভায় থাকতে পারেননি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
এমবিএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।