ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’ ‘নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

ঢাকা: নিরাপদ সড়ক ও সমাজ থেকে মাদকমুক্ত করতে বিভিন্ন সময় যেসব সুপারিশ দেওয়া হয় তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যাগুলো সমাধান হচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

তারা বলেন, সমস্যা সমাধান করতে হলে যেসব সুপারিশ আসে সেগুলো বস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে অপরাধীরা যাতে পার পেয়ে না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) ১৪ দল আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই মত দেন। সিরডাপ মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  

বৈঠকে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সবকিছুতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো এখনও সমাধানের পথে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মাদক এখনও সম্পূর্ণ মুক্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু তার নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি বলে সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি। ১৪ দলের এই সেমিনারে যে সুপারিশগুলো এসেছে সেগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে দেবো। সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে অন্য বিষয়ের মতো সড়ক ও মাদক সমস্যারও সমাধান হবে।  

সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান বলেন, সড়কে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে সব সরকারের আমলেই বিভিন্ন সুপারিশ আছে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। সড়কে চাঁদাবাজির কথা বলা হয়, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় মোহাম্মদ নাসিম যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছিল। কারণ তখন আন্তরিকতা ছিল তাই এটা সম্ভব হয়েছিল।  

তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা আমাকে সড়ক দূঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম এই ঘটনায় চালকের ত্রুটি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সঙ্গে সঙ্গে এক সাংবাদিক বললো আপনার আসকারা পেয়ে চালকরা এমন হয়েছে। তখন আমি কি বলবো একটু হেসেছিলাম, এই আমার দোষ।  

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সরকারের সময় বিআরটিসিকে দুর্নীতিবাজ সংগঠনে পরিণত করা হয়েছিল। দেশে হাইওয়ে বলে কিছু ছিল না, নামে মাত্র হাইওয়ে ছিল। পুরো সিস্টেমটাই দুর্বল করে ফেলা হয়েছিল। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় এই সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছিল। এখন আমরা সেগুলো ঠিক করতে পারিনি। তবে প্রত্যেকটি সেক্টরে আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে।  

সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, সড়কে বিরাট বড় নৈরাজ্য চলছে। যানবাহনের ফিটনেস দেখার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। চালকরা মাদক খেয়ে সড়কে নামেন। আর কয়েক মাস পর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষীকি উদযাপন হবে। সেই সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।  

প্রবীন সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে যে সব সুপারিশমালা দেওয়া হয় সেগুরো বাস্তবায়ন হয় না। সুপারিশ বাস্তাবয়নের এই অবহেলা দূর করতে হবে।  

জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে হবে। এটা করতে না পারলে সমস্যার সমাধান হবে না। অপরাধীরা অপরাধ করে বেরিয়ে যাচ্ছে, বিচার হচ্ছে না। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।  

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, মাদকসেবীদের সঙ্গে পুলিশের কোনো কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ আছে। শুনেছি মাদকদ্রব্য ইয়াবার একটি ট্যাবলেটের দাম ৪/৫শ টাকা। যারা দিনে চারটা খায় তাদের ২০০০ টাকার প্রয়োজন হয়। এই টাকা যোগাতে তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিতে নামে।  

গোল টেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দোকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।  

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ।    

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।