ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

মসিক নির্বাচন

জাল সইয়ে ‘ধরা’ জাপার বিদ্রোহী প্রার্থী

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
জাল সইয়ে ‘ধরা’ জাপার বিদ্রোহী প্রার্থী

ময়মনসিংহ: দুই মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম। কিন্তু তিনি ভোটার হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন! রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। রফিকুলের স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামীর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। 

স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণার অভিনব এই কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী আবু মুসা সরকার।  

কেবল রফিকুলই নন; অভিযোগ উঠেছে, আরো দুজন ভোটারের স্বাক্ষর জাল করেছেন তিনি।

ফলে এমন ‘ধরা’ খাওয়ায় বাতিল হয়ে গেছে তার মনোনয়নপত্রটি।  

বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসন্ন মসিক নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে স্বাক্ষর জালের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।  এ ঘটনায় জাতীয় পার্টির আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বজিৎ ভাদুরীর মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়।  

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ইকরামুল হক টিটু ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আহমেদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও মসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান।  

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী আবু মুসা সরকার। এজন্য তার পক্ষে ৩০০ জন ভোটারের স্বাক্ষর দেয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু তার দেয়া তালিকা মোতাবেক ৫ জনের স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করা হয়।  

২ জন ভোটার স্বাক্ষর দিয়েছেন এবং বাকি ২ জন স্বাক্ষর দেননি বলে প্রমাণ হয়েছে। পাশাপাশি রফিকুল ইসলাম নামে আরেকজন ভোটার দুই মাস ধরে কারাগারে থাকলেও তার স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী।  

ফলে এসব ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আবু মুসার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।  

প্রায় একই রকম অভিযোগ প্রমাণিত হয় আরেক প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডলের বেলায়ও। তিনি ঋণখেলাপি হওয়ার পাশাপাশি ৩ জন ভোটারের স্বাক্ষর জাল করে করেছেন বলে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

ফলে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। জাল স্বাক্ষরের জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বজিৎ ভাদুরীরও।  

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু মুসা সরকার ও বিশ্বজিৎ ভাদুরীকে অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করতে আধা ঘণ্টা সময় দেয়া হয়।

কিন্তু তারা স্বাক্ষর জাল করা ভোটারদের এই সময়ে তাদের সামনে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হন।  

এর আগে উৎসব মুখর পরিবেশে সোমবার (৮ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মেয়র পদে ৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র  জমা দেন।  

৩৩ টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১ টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে যথাক্রমে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। যাচাই বাছাই শেষে বিকেল ৫ টার পরে তাদের বিষয়ে ব্রিফ করবেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।  

৫ মে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮ জন। ১২৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে-ইভিএমে। তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ এপ্রিল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এমএএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।