ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠ উপহারের দিনে কাঁদলেন প্রশাসক টিটু

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৯
রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠ উপহারের দিনে কাঁদলেন প্রশাসক টিটু বক্তৃতা দিতে গিয়ে কাঁদছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু, ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: এপ্রিল মাসটি দুঃসহ যন্ত্রণার ভারী বোঝা তার জীবনে। এই মাসটিতেই মা-বাবাকে হারিয়েছেন। আবার এই এপ্রিলেই নিজের রাজনৈতিক জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহারও পেয়েছেন ইকরামুল হক টিটু।

ফলে স্বভাবতই আবেগে ভেসে পড়েন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের এ প্রশাসক। সংবর্ধনার মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের বক্তৃতার পর্বে স্বাভাবিক থাকতে পারেননি।

নিজেকে এতিম উল্লেখ করে কেঁদেছেন অঝোরে। স্থানীয় জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ-উচ্ছ্বাসে জীবনের বিয়োগ ব্যথার কথা উচ্চারণ করলেন।

অঙ্গীকার করলেন মডেল ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন উপহারের। দোয়া চাইলেন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী আর নিজের প্রয়াত মা-বাবা’র জন্য। ভোট চাইলেন আগামী ৫ মে নৌকা প্রতীকে।

শনিবার (০৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে এভাবেই নিজেকে সমর্পণ করলেন ময়মনসিংহ পৌরসভার এই সাবেক মেয়র। শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) আসন্ন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে তাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

মনোনয়ন নিয়ে ময়মনসিংহে প্রবেশের পথে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলা পয়েন্ট থেকে কয়েক হাজার মোটরবাইক, প্রাইভেট কার শোডাউনে তাকে বরণ করে নেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

স্থানীয়দের হৃদয় নিঃসৃত আবেগ-ভালোবাসায় অভিভূত টিটু এ দিন রাতে সংবর্ধনার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ফুপিয়ে কেঁদেছেন শিশুর মতো। বয়স ভুলে এই কান্না ময়মনসিংহবাসীর প্রতি তার বিনম্র শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতার দৌলতেই।

প্রশাসক টিটুর কান্নায় নেতা-কর্মীরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।  ছবি: অনিক খানসাবেক মেয়র টিটু বলছিলেন, আপনাদের এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করার সাধ্য নেই আমার। আমার প্রতি এই অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা।

এপ্রিল মাসটি আমার জন্য ভীষণ কষ্ট এবং যন্ত্রণার। এই মাসে আমার মা’কে হারিয়েছি, বাবাকে হারিয়েছি। কিন্তু আজকে এই ময়মনসিংহবাসী আমাকে যা উপহার দিয়েছে, তাতে আমার বাবা-মাকে হারানোর কষ্ট কিছু মুহূর্ত হয়তো ভুলে থাকতে পারবো।

‘আমি তাদের আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া চাই। আমি এতিম একজন মানুষ। আপনারা আমাকে যেভাবে বুকে টেনে নিয়েছেন, এই ঋণ শোধ করার নয়। ’

দুই হাত তুলে এতটুকু চাই, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, শেষ দিন পর্যন্ত আমাকে সন্তানের মতো আগলে রাখবেন- ভেজা চোখে এই কথা বলছিলেন মসিকের প্রথম প্রশাসক।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, আমি যখন ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন ময়মনসিংহ কী ছিল, এখন কেমন হয়েছে, তা আপনারা নিঃসন্দেহে উপলব্ধি করবেন।

‘প্রধানমন্ত্রী পিতৃহারা, মাতৃহারা সন্তান। তিনি বাঙালি জাতির জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। ১৯৭৫ সালে তার পরিবারের সদস্যরা বাঙালি জাতির জন্য রক্ত দিয়েছেন। ’

‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও মুক্তির প্রতীক নৌকায় আগামী ৫ মে আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করে নেত্রীকে উপহার দেবেন, এই আকুল আবেদন জানাই’ বলতে বলতেই আবারও গলা ধরে আসে টিটুর।

এর আগে নগরীর টাউন হলের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান টিটুসহ দলটির নেতাকর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৯
এমএএএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।