ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি আ’লীগের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৯
২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি আ’লীগের

ঢাকা: একাত্তরের নৃশংসতা গোটা বিশ্বে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মে তুলে ধরতে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না দিলে ভবিষ্যতে এমন বর্বরতার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে স্বাধীনতার নেতৃত্বদাতা দলটি। 

সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যা: জবাবদিহিতা ও স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।

 

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। সেমিনারে ৫০টি দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।  

সেমিনারে ‘১৯৭১’র জেনোসাইড: এ ক্রিড ফর জাস্টিস’ শিরোনামে বাংলাদেশের গণহত্যার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বের বুকে পরবর্তীতে যেনো কোনো শাসকগোষ্ঠী এমন গণহত্যার সাহস না পায়, সেজন্য ২৫ মার্চ দিনটির স্বীকৃতি এবং হত্যাকারীদের বিচার হওয়া জরুরি।

সেমিনারে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, যদি এটাকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি আমরা না দেই, তাহলে তা হবে ভবিষ্যতে এই ধরনের গণহত্যা ঘটার দরজা খোলা রাখা। একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি যদি মিলতো, তবে রুয়ান্ডার ঘটনা ঘটতো না। যদি আমাদের ওপর গণহত্যা চালানোদের বিচার পাকিস্তানে হতো, তবে বেলুচিস্তানে আজ যা ঘটছে, তা ঘটতো না।  

১৯৭১ সালে অক্সফামের হয়ে বাংলাদেশের শরণার্থী নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিত্ব ব্রিটিশ নাগরিক জুলিয়ান ফ্রান্সিস মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, আমি কখনো ১৯৭১ সালকে ভুলতে পারবো না। এখনো মাঝে-মধ্যে ভোরবেলা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায়। আমি দেখি, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আছি আমি এবং আমার হাতে একটি শিশুর লাশ।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর মার্চ এবং ডিসেম্বর মাসে আমাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে চলা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে লিখতে বলা হয়। আমার পরিচিত মানুষ বা এদেশ থেকে অনেকেই বলেন লেখার জন্য। কিন্তু আমি কী লিখবো? একই কথা কি বারবার লেখা যায়? আসলে একই কথা বারবার লিখতে হয়। বারবার জানাতে হয়। তাই বারবার সত্য ইতিহাস তুলে ধরে এই মানুষদের স্মরণ করানো গুরুত্বপূর্ণ। মার্চ মাসের ২৫ তারিখকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার উপযুক্ত সময়

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা সম্ভব নয়, যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি না দেয়। আমরা আশা করছি, তারা আমাদের পাশে থাকবে।  

বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টায় ভাটা পড়ে বলেও উল্লেখ করেন শাহরিয়ার আলম।  

বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৯ 
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।