ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

উপজেলায় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখতে পারে আ’লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
উপজেলায় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখতে পারে আ’লীগ

ঢাকা: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে দলের অন্যদের প্রার্থী হওয়া উন্মুক্ত করে দিতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো জোট থাকছে না। দলীয়ভাবেই প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে দলটি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে যেকোনো মূল্যে দলের একক প্রার্থী নিশ্চিত করা হবে। সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই একক প্রার্থী নিশ্চিত করার ব্যাপারে কঠোর হবে দলটি। আর যদি বিএনপি অংশ না নেয় তাহলে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। দলীয় মার্কার প্রার্থীর পাশাপাশি দলের অন্যদেরও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে। আওয়ামী লীগ একজনকে মনোনয়ন দেবে আর দলের অন্য কেউ প্রার্থী হতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে। এ ক্ষেত্রে দল থেকে বাধা দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও জানান, উপজেলা নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশগ্রণের কোনো সম্ভাবনা নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও মহাজোটের শরিকরা আলাদা আলাদাভাবে নিজ নিজ দলের প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিলেও ১৪ দল আলাদাভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে বলে নেতারা জানান। গত উপজেলা নির্বাচনেও জোটগতভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জোটগতভাবে নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। উপজেলা নির্বাচন এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেওয়া হবে। এমনিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনেক বেশি। এখানে জোটের কোনো সুযোগ নাই।

আগামী মার্চে কয়েক ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে দলীয়ভাবে ও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন চালু হওয়ার পর এই পদ্ধতিতে উপজেলা নির্বাচন এবারই প্রথম হতে যাচ্ছে। গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর ফেব্রুয়ারিতে থেকে কয়েক ধাপে উপজেলা নির্বাবচন হয়। এরপর সরকার স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের আইন করে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনে যে নিরঙ্কুশ বিজয় এসেছে উপজেলা নির্বাচনেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে এখন থেকেই প্রস্তুতি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কেন্দ্র থেকে জেলা ও উপজেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর করা এ চিঠি দলের জেলা ও উপজেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম পাঠাতে বলা হয়েছে।  

স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীর মতামতের ভিত্তিতে সম্ভব হলে একজন প্রার্থী চূড়ান্ত করে নাম পাঠাতে হবে। আর সেটা না হলে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীর নাম পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে নাম পাঠাতে হবে।

সূত্র আরও জানায়, উপজেলা পর্যায় থেকে পাঠানো নামের ওপর ভিত্তি করে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। এমপি, মন্ত্রীর আত্মীয় বা তৃলমূল নেতাকর্মীর মতামত উপেক্ষা করে এমপি, মন্ত্রীর কাছের কেউ যাতে মনোনয়ন না পায় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সে জন্য হাতে সময় রেখেই উপজেলা পর্যায় থেকে নাম পাঠাতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে নাম পাঠানোর পর কেন্দ্র থেকেও যাচাই-বাছাই করা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আগামী শনিবার (২৬ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা আছে। এই সভায় প্রস্তুতির বিষয় এবং প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এবং একটি দিক নির্দেশনা আসতে পারে। সে অনুযায়ী কাজ শুরু করা হবে। তবে ইতোমধ্যেই আমাদের দলের যারা আগ্রহী প্রার্থী তারা তো মাঠে নেমে গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।