ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

একাদশ নির্বাচন নিয়ে রিজভীর যত অভিযোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৯
একাদশ নির্বাচন নিয়ে রিজভীর যত অভিযোগ

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্মরণকালের সবচেয়ে ‘মহাজালিয়াতি’ হয়েছে দাবি করে ১১টি অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (০৪ জানুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

রিজভী বলেন, সারাদেশে অধিকাংশ আসনের অনেক কেন্দ্রে আগের রাতে ব্যালট দিয়ে বাক্স ভর্তি করে রাখা হয়েছে।

একারণে ভোটের দিন বহু কেন্দ্রে সকাল ১০/১১টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যায়। হাজার-হাজার ভোটার ভোট দিতে এসেও ভোট দিতে পারেননি।

সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ খুব ধীরগতিতে করা হচ্ছিল। এর কারণ, শুরু থেকেই বাহির থেকে ভোটার আসার সময় পাশাপাশি ভেতরে ব্যালটে অবৈধ সিল মারার কাজ চলছিল।

ভোটের আগের রাত পর্যন্ত পুলিশ/ডিবি/আওয়ামী লীগ কর্মীদের ভূমিকায় বহু কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হয়নি অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ভোটের দিন এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি অথবা মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর বিভিন্নভাবে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকানো হয়েছে।

'আওয়ামী লীগ কর্মীরা ছাড়া উপরের সব কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল পুলিশ/ডিবি/আনসার ও বিভিন্ন স্তরের সিভিল প্রশাসন। এসব কিছু বন্ধ করতে ইসি শুধু যে কিছুই করেনি তা নয়, তারা সব আদেশ-নিয়ম এমনভাবে জারি করেছে যেন এসব কিছু নির্বিঘ্নে নিখুঁতভাবে করা যেতে পারে'।

নির্বাচনের দিনের আগের কয়েক সপ্তাহে বিরোধীদের মিছিলে হামলা করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে, মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে, নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ ডাকলে তারা আক্রান্তদেরই গ্রেফতার করেছে, মামলা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ নিজেরাই ওই কাজ করেছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

তিনি আরো বলেন, বহু প্রার্থীকে আহত করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, প্রচারণায় যেতে দেওয়া হয়নি, নির্মম-নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে।

অধিকাংশ আসনে প্রচারণা করতে দেওয়া হয়নি। পোস্টার টানাতে দেওয়া হয়নি, ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।

বিরোধী নেতাকর্মী এমনকি সাধারণ সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে, আগুন লাগানো হয়েছে, অনেকে বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।

'এতকিছুর পরও লাখ-লাখ ভোটার সাহস করে ভোট দিতে বেড়িয়েছিলেন, কিন্তু তাদের অধিকাংশ ভোট দিতে পারেননি। কারণ নির্বাচনটি ছিল সম্পূর্ণ প্রহসন, প্রতারণা আর জালিয়াতিতে পরিপূর্ণ'।

'সরকার আর ইসির মিথ্যা আশ্বাসে সব দল নির্বাচনে এলো। কিন্তু পুলিশ, ডিবি, বিজিবি, র‌্যাব, বিচার বিভাগ, সিভিল প্রশাসন, দুদক আর নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম এই নির্বাচন সংঘটিত করা হল'।

দেশ ও জাতির প্রতি এতোবড় প্রতারণা ও জালিয়াতির জন্য জনগণের আদালতে প্রকাশ্যে এগুলোর বিচার একদিন হবেই বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন রিজভী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
এমএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।