ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অন্যান্য দল

জামায়াতের ‘স্বতন্ত্র’ কৌশল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
জামায়াতের ‘স্বতন্ত্র’ কৌশল

ঢাকা: নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোট- ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ২০ দলীয় জোট প্রায় ১০ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে যাচ্ছে। দুই জোটের নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিএনপি ও তাদের নিবন্ধিত শরিক দলগুলো ধানের শীষ মার্কা নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু জোটের বড় শরিক জামায়াতের কী হবে?

দলটির আমির-সেক্রেটারি জেনারেল থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় নেতারা মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলেছেন। স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতের নিবন্ধনও সম্প্রতি বাতিল হয়ে গেছে।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দল হিসেবে যেমন জামায়াতের নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ নেই, তেমনি তাদের প্রতীক নিয়েও ভোটে দাঁড়ানোর উপায় নেই। রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে জামায়াতের কৌশল নিয়ে আলোচনার মধ্যে দলটির শীর্ষ পর্যায় বলছে, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থিতার কৌশলই নিচ্ছে।

জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আপাতত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এরইমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জামায়াতের তিন নেতা- চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম এবং বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছেন। যদিও চূড়ান্ত কৌশল এখনই প্রকাশ করতে চাইছেন না তারা। শেষ মুহূর্তেও দলটির কৌশল পরিবর্তন হতে পারে ইঙ্গিত দিচ্ছেন নেতারা।  

দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতার ও ফাঁসিতে ঝোলার পর থেকেই জামায়াত অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতার দায় দলটির কাঁধে বর্তালে কোণঠাসা হয়ে পড়ে দলটি। গণফোরাম-জেএসডি-নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে মিলে বিএনপি নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়লে অনেকটা ‘একঘরেই’ হয়ে পড়ে জামায়াত। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণায় বলা হয়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী কোনো দল ও ব্যক্তির সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। বিএনপির নতুন জোটের এমন ঘোষণায় ‘নীরব’ থাকার কৌশল নেয় তাদের ২০০১-২০০৬ মেয়াদের সরকারের অংশীদার জামায়াত। আগামী নির্বাচনও ‘কৌশলে’ই পার করে দিতে চায় স্বাধীনতাবিরোধী দলটি।  

পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও নিবন্ধন বাতিলের পর নির্বাচনে কৌশল কী হবে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত আছে স্বতন্ত্রভাবে আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচন করবেন। ’ 

আরেক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা মোট ৩৯টি আসনে নির্বাচন করেছিলাম। তখন বিএনপি জোট আমাদের ৩৪ আসন ছেড়ে দিয়েছিল। বাকিগুলো আমরা তাদের ছেড়ে দিয়েছিলাম। এবার অন্তত অর্ধশত আসনে আমাদের ফাইটিং ক্যান্ডিডেট রয়েছেন। সেক্ষেত্রে জোটের কাছে আমরা ৫০-৬০ আসন চাইবো। কতোটা দেবে সেটা দেখতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। ’

জামায়াতের সর্বোচ্চ-নীতি নির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে কী কৌশলে অংশ নেবে সেটা এখনই বলা কঠিন। আসন ভাগাভাগির বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০০৮ সালে বিএনপি আমাদের ৩৪ আসন দিয়েছিল। এবার তারচেয়ে বেশি আসন প্রত্যাশা করছি। দুই-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এমএইচ/জিপি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।