ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সবার চোখ গণভবনে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৮
সবার চোখ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (০১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত সংলাপ।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে প্রধান বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই সংলাপে দৃষ্টি পুরো জাতির। সাত দফা দাবি নিয়ে সংলাপের টেবিলে বসছে ঐক্যফ্রন্ট।

 

অপরদিকে ১৪ দল বলছে, সংবিধানের বাইরে আলোচনা করে লাভ হবে না।  সংলাপ আহ্বান ও সম্মতির পর রাজনীতির মাঠে কিছু আলামত বিরোধী জোটের নেতাদের মধ্যে সংলাপের ফল নিয়ে সংশয় তৈরি করছে। আলামত যাই হোক, বহুল প্রত্যাশিত সংলাপের টেবিল থেকে ভালো কিছু নিয়ে ফেরার আশায় আজ সরকারপ্রধানের সরকারি বাসভবন গণভবনে যাবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। সংলাপে আলোচনার সঙ্গে নৈশভোজের আয়োজন থাকবে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তাতে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন ১৪ দলীয় জোটের ২৩ নেতা। অপরপক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যোগ দেবেন ১৬ জন নেতা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির আরও চারজন থাকবেন ওই দলে।  

দেশবাসী তাকিয়ে সংলাপের দিকে

বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) দেশবাসীর নজর থাকছে গণভবনের দিকে। অনেকটা ‘সারপ্রাইজ’র মতো ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপের ঘোষণা পুরো দেশের রাজনীতিতে স্বস্তির আবহ নিয়ে এসেছে। পরে সংলাপের জন্য সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও প্রফেসর ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সাড়া পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, অন্যান্য দলের সঙ্গেও সংলাপে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী।

২০১৪ সালের আলোচিত নির্বাচনের আগে থেকেই সংলাপ দাবি করে আসছিল বিএনপি। এ দাবির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের পর আলোচনার আহ্বান জোরালো থাকলেও সময়ের স্রোতে তা গতি হারায়। ওই নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসাতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগও ভেস্তে যায়। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে প্রায় এক দশক পার হওয়ায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এই অবস্থার মধ্যে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের সংলাপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।  

এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেও এই উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কোনো চাপে পড়ে এই সংলাপে যাচ্ছে না তারা। চাপ থাকলে নিজেরাই সংলাপের উদ্যোগ নিতেন। বিরোধী জোটের সংলাপের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজকের সংলাপ হচ্ছে।

সংলাপের সূচনা যেভাবে 

গত রোববার সংলাপের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তার চিঠির জবাবে পরের দিন সংলাপে সাড়া দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরের দিন সকালে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। সংলাপে করণীয় ঠিক করতে ওই দিন বিকেলেই বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে সাত দফার ভিত্তিতে আলোচনার লক্ষ্য ঠিক করার পাশপাশি ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নাম চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংলাপে থাকবেন ১৪ দলের ২৩ নেতা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবেন ১৪ দলীয় জোটের ২৩ নেতা। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, মঈনুদ্দিন খান বাদল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের ড. আবদুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোটেক শ ম রেজাউল করিম। বুধবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে থাকবেন ১৬ জন

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের হয়ে ১৬ জন গণভবনে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আছেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, এসএম আকরাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এমএইচ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।