ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

সংলাপে সংবিধানের বাইরে যাবে না আওয়ামী লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
সংলাপে সংবিধানের বাইরে যাবে না আওয়ামী লীগ

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে সংবিধানের ভেতর থেকেই সমাধান বের করার অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ। সংবিধান ভঙ্গ করে বা সংবিধানের বাইরে কোনো দাবি মেনে নেবে না ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংবিধানের ভেতরে থেকেই বর্তমান সংকটের সমাধান চায় দলটি। সংবিধান অনুসরণ করেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সংবিধান মেনেই সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আসতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনায় এ বিষয়ই তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ সরে আসবে না।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে ৭ দফা দিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করতে গেলে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন সম্ভব নয় বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। কারণ এর জন্য সংবিধান সংশোধনের বিষয় রয়েছে। সে সময় এখন আর হাতে নেই। আর দল নিরপেক্ষ অনির্বাচিত কোনো সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর বা অনির্বাচিত কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন করা এই ধারায় আওয়ামী লীগ পুনরায় ফিরে যাবে না বলেও দলটির ওই নীতিনিধারক নেতারা জানান।

আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এ সংলাপের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেন সংলাপ চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেওয়ার পর তাতে সম্মতি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপের তারিখ এবং সময় নির্ধারণ করে মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) ড. কামাল হোসেনকে চিঠি পাঠান তাতেও সংবিধানসম্মত আলোচনার কথা উল্লেখ রয়েছে।

কামাল হোসেনকে দেওয়া ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক সংগ্রাম এবং ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত।

এর আগে গত সোমবার (২৯ অক্টোবর) সংলাপে আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানানোর পর রাতে দশম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননও সংবিধানের ভেতর থেকেই সমাধানের পক্ষে মত দেন।  

ওই বক্তব্যে মেনন বলেন, সংলাপ হবে, এটা রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক দিক। তবে সংবিধানের ভেতর থেকেই আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত হতে হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, তারা একটা লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু ইতোপূর্বেই বলেছিলেন সংলাপের সুযোগ নেই। এখন আমরা নির্বাচনমুখী। যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। তারপরও যেহেতু তারা একটি চিঠি দিয়েছেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। গণতন্ত্রে সংলাপ যে কোনো সময় হতে পারে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তাই আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) ধৈর্য দেখিয়ে সংলাপের আয়োজন করেছেন। সংলাপে তারা তাদের কথা বলবেন, আমরা শুনবো। যেগুলো যুক্তিসঙ্গত সেগুলো বিবেচনা হবে। মূলত সংবিধানের বাইরে কিছু চাইলে হবে না। সংবিধান ভঙ্গ করে কিছু হবে না। আমরা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কথা বলছি। যত দূর সম্ভব প্রতিষ্ঠানগুলোকে মজবুত করার চেষ্টা করছি। একদিকে এই কথা বলি আর আরেকদিকে যদি তা ভঙ্গ করি তাহলে তো হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮ 
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।