ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে কঠোর হবে সরকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে কঠোর হবে সরকার

ঢাকা: বিএনপি ও গণফোরামসহ কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’র কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলে তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের ১৪ দলীয় জোট।

তবে ঐক্যফ্রন্ট যে দাবির কথা বলছে, সেটা নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার।

ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের এ দৃষ্টিভঙ্গি জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, এই মুহূর্তে আন্দোলন করে দাবি আদায়ের ক্ষমতা ঐক্যফ্রন্টের নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় খুবই কাছে এসে গেছে। আন্দোলন করে দাবি আদায়ের জন্য যে পর্যাপ্ত সময় দরকার, সেই সময় তারা পাবে না।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আগামী ২৩ অক্টোবর সিলেটে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। নতুন এই জোট থেকে যে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে তা বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমে অন্য বিভাগীয় শহরেও সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।   

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার চিন্তা করছে ক্ষমতাসীনরা। বিভিন্নভাবে জোর প্রচারে নিয়ে আসা হবে নতুন এই জোট ও জোট নেতাদের নেতিবাচক দিক ও কর্মকাণ্ডগুলো। বিএনপিসহ জোট নেতাদের অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এই জোটের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা হবে। এজন্য ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মাঠে থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, তারা কর্মসূচি দিয়েছে, সেটা সমস্যা নয়। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু তারা যে দাবি করছে সেগুলো অযৌক্তিক, সমর্থনযোগ্য নয়। এটা নিয়ে চক্রান্ত করার চেষ্টা করলে, পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করলে এ দেশের জনগণ তাদের প্রতিহত করবে। আমরা ১৪ দলও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আছি।  

আগামী ২৯ অক্টোবর ঢাকায় গণসমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে ১৪ দল। এর আগে ২৬ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গায় সমাবেশ করা হবে। এর মধ্যে যশোরেও সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে। তবে তারিখ পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ১৪ দল নেতারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার কথা বলা হলেও নির্বাচনের আগে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে বলেও শঙ্কা করছেন ক্ষমতাসীনরা। এজন্য সরকার, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল সতর্কাবস্থানে রয়েছে। এই জোটের গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মাঠে থাকার পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারকরা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও তাদের কর্মসূচিকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কারণ এই জোটের মূল শক্তি হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সঙ্গে রয়েছে জামায়াত। গত নির্বাচন ঠেকাতে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্নভাবে সন্ত্রাস ও নাশকতা চালিয়েছিলো। এবার নতুনভাবে জোট করে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের মাঠের অবস্থান কী হবে সেটাও দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগের ওই নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা হলে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে যাবে। যে কোনো পরিস্থিতি এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে জোট নেতারা চাপে পড়বেন। বিশেষ করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
 
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কর্মসূচি দিয়েছে ভালো কথা, তারা যদি নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য কর্মসূচি দেয় তাহলে সেটা ভালো। আমরা মনে করবো তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও তো চাইছি সব দল নির্বাচনে আসুক। শন্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে তো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু দাবি আদায়ের নামে যদি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হয়, তাহলে নিশ্চয়ই সেটা প্রতিহত করার ব্যবস্থা থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮ 
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad