ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

মৃত ব্যক্তিও ময়মনসিংহ মহানগর আ’লীগের কমিটিতে 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
মৃত ব্যক্তিও ময়মনসিংহ মহানগর আ’লীগের কমিটিতে 

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের কোতোয়ালী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন আফাজ উদ্দিন সরকার। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চার মাস আগে মারা গেছেন তিনি। কিন্তু গত মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জ্যেষ্ঠ সদস্য পদে রাখা হয়েছে তাকে। 

২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর আংশিক ঘোষিত ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির সভাপতি হন এহতেশামুল আলম। এবার তার স্ত্রী আনোয়ারা খাতুনকে কমিটির দুই নম্বর সদস্য করা হয়েছে।

এই কমিটির সদস্য প্লাবন চন্দ। আবার তার ছোট ভাই পার্থ প্রতিম চন্দকে করা হয়েছে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক।  

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফাতেমা তুজ জোহরা রাণীকে রাখা হয়েছে সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুমোদিত জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে। আবার তার ছেলে রাফিউল আদনান প্রিয়মকে সদস্য করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে। অনেক সিনিয়র নেতাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে প্রিয়মের পরে।  

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কমিটি দু’টির পদ-নাম ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। তবে ত্যাগ ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

অভিযোগ ওঠেছে, এ কমিটির ২০ নম্বর সদস্য ধনাঢ্য জুয়েলারি ব্যবসায়ী মালিক মো. শহীদুল্লাহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র কমান্ডার শায়খ আব্দুর রহমানের ভাগ্নে। শায়খ আব্দুর রহমানের ফাঁসির পর তার মরদেহ গ্রহণ থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিলেন তিনি।  

সূত্র মতে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি হাইকমান্ডের কাছে জমা দেওয়ার পর এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে আলোচনার পরও তাকে ঘোষিত এই কমিটিতে বহাল রাখা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান তাজুল আলমকেও রাখা হয়েছে সহ-সভাপতি পদে।  

একই সূত্র জানায়, ওই সময় ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিত কমিটির ৩১ নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও জমা দেওয়া হয় কেন্দ্রে।  

কিন্তু এর বেশিরভাগই এখন কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। মোস্তফা মামুনুর রায়হান অসিমের স্বজনেরা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ বিরোধী মহলের অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন তিনি।

ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ পৌরসভার দুই বারের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘোষিত কমিটির ৮ নম্বর সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান প্রিন্স ছিলেন জিয়াউর রহমানের জাগপা দলের সদস্য এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তার মতো আরও অনেক অনুপ্রবেশকারী এই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। ’ 

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আফাজ সরকারকে মরণোত্তর সম্মান দেওয়া হয়েছে। এক মাস পর পরিবর্তন করা হবে। মালিক মো. শহীদুল্লাহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রিন্স এক সময় জাগপা করলেও ২০ বছর আগে শামসুল হুদা চৌধুরীর সঙ্গে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ’

‘লিয়াকত শিকদারের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন মোস্তফা মামুনুর রায়হান অসিম। ওয়ার্ড কমিশনার তাজুল আলমের বাবা হতে পারেন স্বাধীনতাবিরোধী। তবে ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছেন তাজুল অনেক আগে থেকেই। প্রতেক্যের যোগ্যতা ও ত্যাগ থেকেই কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং কেন্দ্র অনুমোদন দিয়েছে। ’ বলেন এহতেশামুল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮ 
এমএএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।