ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরির আহ্বান মির্জা ফখরুলের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরির আহ্বান মির্জা ফখরুলের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল

ঢাকা: বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা সরকার পরিবর্তন চাই। কিন্তু সেই নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি একথা জানান।

ফখরুল বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন, সাংবাদিক ভাইয়েরাও প্রশ্ন করেন, আমরা নির্বাচনে যাব কিনা? আমরা বলেছি, নির্বাচনেতো আমাদের যেতেই হবে, কারণ আমরাতো রাজনৈতিক দল।

নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন চাই, করতেও হবে তাই। কিন্তু কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে কথা বলার সুযোগ থাকবে না, ক্যাম্পেইন করার সুযোগ থাকবে না, জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সেটা কি নির্বাচন হবে?

মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে একটি প্রজ্ঞাপন দেখলাম পুলিশকে বলা হয়েছে, প্রিজাইডিং অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের নাম তালিকা করে পাঠাও। নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন নেই, পুলিশ তালিকা করছে। কি চমৎকার, যেসব জায়গায় বিরোধীদলের শক্তিশালী নেতা আছে তাদের তালিকা করে জেলে ভরা হচ্ছে। এভাবে নির্বাচন হবে না।  

‘পরিষ্কার কথা, খালেদা জিয়াকে সবার আগে মুক্তি দিন, নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করুন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন, সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করুন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার তৈরি করুন। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে মোতায়েন করতে হবে। সব দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে। আর ইভিএম চলবে না।
 
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার গায়েবি মামলায় ২ লাখ তেত্রিশ হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব কখন করে? যখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। যখন দেখে ২০ দলীয় জোট যদি নির্বাচনে যায় তাহলে তাদের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।

উন্নয়নের মেগা প্রজেক্টের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এমন উন্নয়নের মেগা প্রজেক্ট যে পদ্মা সেতুর কয়েকটি পিলার করেছে, বাকিগুলোর তলদেশ খুঁজে পাচ্ছে না। নদীকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে যে, শরীয়তপুরের নড়িয়া ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। ভারত থেকে তেল নিয়ে আসার জন্য পাইপলাইন বসানো হচ্ছে, নতুন নতুন পোর্ট তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সে পোর্টের দরকার আছে কি নেই তাও চিন্তা করা হচ্ছে না। সবকিছুর উদ্দেশ্য একটাই- ব্যাপক দুর্নীতি।  
 
জাতীয় ঐক্যর বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যর ডাক খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগেই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দুঃশাসনকে সরাতে হলে সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুধু ২০ দল নয়, আসুন সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, ধর্মবর্ণ সবাই একত্রিত হয়ে এই সরকারকে বাধ্য করি একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে, যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।   
 
জমিয়তে ‍উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমানসহ ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন নেতা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
এমএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।