ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি মামাবাড়ির পুরনো আবদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি মামাবাড়ির পুরনো আবদার

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের গঠন করতে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি মামা বাড়ির পুরনো আবদার। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে কার কাছে দায়িত্ব দেবেন? দেশে কি কোনো সংবিধান থাকবে না, আইন-কানুন থাকবে না? এটা যেন তাদের মামা বাড়ির পুরনো আবদার।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাবো না, যাচ্ছিও না।

অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, চলমান অধিবেশন শেষে অক্টোবরে আরেকটি অধিবেশন বসবে। সেই অধিবেশন সম্ভবত মধ্য অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হবে। তফসিল ঘোষণার পর আর সংসদ বসবে না। অক্টোবরের অধিবেশন খুবই সংক্ষিপ্ত হবে। এরপর মন্ত্রীরা কেবল রুটিন ওয়ার্ক করবেন। আর সংসদ আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙবেও না, সংসদের কোনো কার্যকারিতাও থাকবে না, নির্বাচনকালে সংসদ বসবেও না। দেশে যদি যুদ্ধপরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেটা ভিন্ন কথা। তবে আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আলাপ-আলোচনা করেই সব কিছুর সমাধান চাই। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেই যুদ্ধে জড়াইনি।

‘আইন না মানলে আমার গাড়িরও জরিমানা করবেন’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতিয়েরেসের আমন্ত্রণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জাতিসংঘে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, জাতিসংঘ যদি তাকে আমন্ত্রণ করে, তারা যদি দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে দেখা করেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কী এজেন্ডা আছে আমি তা জানি না। নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তারা তো জাতিসংঘে অবিরাম অভিযোগ দিয়েই যাচ্ছে। দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সেসব নালিশের ব্যাপারে তাদের মতামত কী, সামনাসামনি তাদের পলিটিক্যাল উইং আলাপ করতে পারে বলে অনুমান করছি। সেটা নিয়ে আমাদের আপত্তি করার  বিষয়  নয়। আমাদের শক্তির উৎস এদেশের জনগণ। নির্বাচনে জনগণ পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। আমাদের সিদ্ধান্ত, কোনো সংবিধানবর্হিভূত ‘প্রেসারের’ বা চাপের কাছে আমরা মাথা নত করবো না। আর নির্বাচনকালীন সরকারের বিএনপিকে তো আমন্ত্রণ করিনি, তারা তো সংসদে নেই।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি প্রসঙ্গে দলটির নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এদেশের জনগণ যদি উতলা হতো, তাহলে গ্রেফতারে পরেই বিস্ফোরণ ঘটে যেত। একটা ছোট আন্দোলনও দেখলাম না।

‘তারা সর্বাত্মক আন্দোলন করবে এটা লোকে বিশ্বাস করে না। তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যেই ঐক্য নেই। একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করে না। একজন আরেকজনকে বলে সরকারের দালাল। তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ নয়, সর্বাত্মক আন্দোলন করবে কিভাবে? তাদের সর্বাত্মক আন্দোলন নিরীহ অনশনে পরিণত হয়েছে। এতো নিরীহ কর্মসূচির পর সর্বাত্মক আন্দোলনের সাহস নেই। সাহস থাকলে আগেই হতো, এখন আর সময় নেই। এখন তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। জায়গা পাবে না। জনগণ এখন নির্বাচনী মুডে আছে। ’

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন করেন, জনগণকে নিয়ে করেন। আন্দোলন অহিংস করলে শান্তি। আর যদি সহিংস হয় তাহলে জনগণকে নিয়ে আমরা প্রতিহত করবো। ’

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ট্রেনযাত্রায় জনভোগান্তি হয়েছে বলে অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের নামে বিএনপি যখন সমাবেশ করে, লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ হয়- সেটা নিয়ে কেউ কথা বলেন না। আমরা তো স্টেশনে গেছি, সেখানে মাত্র ৬০০ যাত্রী। তারপরও কিছু দুর্ভোগ হতে পারে। মানুষের মাঝে তাতে কোনো ক্ষোভ ছিল না।

নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বিএনপি দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারটি আদালতের এখতিয়ার। মুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা বা সুযোগ কোনোটাই সরকারের নেই। আদালত এরইমধ্যে তাকে ৩০টি মামলায় জামিন দিয়েছেন। সরকার যদি আদালতে হস্তক্ষেপই করতো, এতোগুলো মামলার জামিন পেলেন কিভাবে? জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় উচ্চ আদালতও জামিন দিয়েছে। তাই তার জামিন পুরোপুরি আদালতের ওপর বর্তায়। আদালতই তাকে মুক্তি দিতে পারে।  

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা তার মুক্তির ব্যাপারে এতো আগ্রহী, এতো সিরিয়াস, তাহলে ১০ বছর কেন একটা মামলা প্রলম্বিত করলেন? এই মামলা অনেক আগেই শেষ হয়ে যেতো। নির্বাচনের সময় পর্যন্ত গড়াতো না, যদি না আপনারা বিলম্বিত করতেন। খালেদা জিয়া ১৫৪ বার (শুনানিতে) অনুপস্থিত থাকবেন, এই দায়িত্ব কে নেবে?

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।