ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয় পার্টি

আর গৃহপালিত বিরোধীদল হতে চাই না: এরশাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৮
আর গৃহপালিত বিরোধীদল হতে চাই না: এরশাদ

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জানিয়েছেন, তার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়া। আর শেষ ইচ্ছা হচ্ছে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখে যাওয়া। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জানিয়ে এজন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।

শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আইইবিতে জাতীয় পার্টির যৌথ সভায় বক্তৃতা করছিলেন এরশাদ। চেয়ারম্যান জানান, ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করে নির্বাচনী কর্মসূচি ঘোষণা করবে জাতীয় পার্টি।

এরশাদ বলেন, ৬ আক্টোবর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ করতে হবে। লাখ লাখ মানুষ সমবেত হতে হবে। আপনারা আসবেন? না আসবেন না! 

জনতা ‘হ্যাঁ’ বলে জবাব দিলে এরশাদ বলেন, আসতে হবে। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিতে হবে। সবাইকে বুঝিয়ে দিতে হবে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমরা আর গৃহপালিত বিরোধীদল হতে চাই না। এবার সরকার গঠন করতে চাই।
 
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত নেতা। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। কারণ, আমাদের হাতে রক্তের দাগ নেই। মানুষের ভালোবাসা আছে, সমর্থন আছে। এবার আমরা কাজে লাগাতে চাই। আমরা ক্ষমতায় গিয়ে দেশ থেকে সন্ত্রাস, খুন, গুম, নৈরাজ্য ও দুর্নীতি আর সহিংস রাজনীতি দূর করবো। আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়বো। শান্তির বাংলাদেশে খুন-গুম থাকবে না, আমরাই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবো। মানুষের ভালোবাসা রয়েছে, আমরা বিজয়ী হবো। তোমরা প্রস্তুতি নাও।
 
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, তোমরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে কষ্ট করে এখানে এসেছো। এজন্য তোমাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এবং জাপার কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের সংগ্রাম। আমরা ইনশাআল্লাহ ক্ষমতায় যাবো। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিতে হবে। সবার জন্য উন্নতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করবো। বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো আমরা। জাতীয় পার্টির উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তরুণদের সামনে তুলে ধরতে হবে।
 
পার্টির আরেক কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, দেশবাসীর সামনে পরিষ্কার হয়েছে- ১৯৯১ থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনামলের চেয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ন’বছর এদেশের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল।
 
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যরিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাও. মাহফুজুল হক, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এমএ মতিন, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, সালমা ইসলাম এমপি, বিএনএ চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, ইসলামী মহাজোটের আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি, অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম ফয়সল চিশতী প্রমুখ।
 
আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, আবুল কাশেম, এমএ মান্নান, নাসরিন জাহান রত্না এমপি, গোলাম কিবরিয়া টিপু, সুনীল শুভ রায়, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, কাজী মামুন, রিন্টু আনোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তাকুর রহমান প্রমুখ।

সকালে শুরু হওয়া এ সমাবেশে পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায় থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী যৌথসভায় অংশ নেন। আইইবির প্রধান ভবনের সামনে স্থাপিত মঞ্চের সামনে থেকে নেতাকর্মীদের ভিড় গিয়ে ঠেকে প্রধান সড়কেও।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮
এসআই/এইচএ/

** ৩০০ আসনে ভোটের প্রস্তুতি নিতে বললেন এরশাদ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।