ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

রাজনীতি

স্কুলছাত্রকে পেটানো ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
স্কুলছাত্রকে পেটানো ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

লালমনিরহাট: সাইকেল চুরির অভিযোগে এক স্কুলছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানোর অভিযোগে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক বাবুকে (২৮) বহিষ্কর করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে জরুরি বৈঠকের মাধ্যমে তাকে বহিষ্কার করেছে আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগ।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মহিষখোচা বাজারে সাইকেল চুরির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে গাছের সঙ্গে বেঁধে এমদাদুল হক (১৩) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রকে পেটান ওই ছাত্রলীগ নেতা।

বহিষ্কার ছাত্রলীগ নেতা আশিক আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বাজারের প্রভাবশালী মোখলেছার রহমানের ছেলে।

আহত স্কুলছাত্র এমদাদুল আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের মৃত সফিকুল ইসলামের ছেলে। সে মহিষখোচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়।

আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের জরুরি বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মহিষখোচা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বহিষ্কারাদেশ আশিকসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ‘স্কুলছাত্রকে গাছে বেঁধে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা’ শিরোনামে বাংলানিউজে প্রকাশিত সংবাদটি দেখে কেন্দ্রীয় কমিটির মোবাইল বার্তার নির্দেশনায় জরুরিভাবে ঘটনাটি তদন্ত করা হয়। তদন্তে প্রাথমিকভাবে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত আশিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা ছাত্রলীগ জরুরি সভায় আশিককে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তার বহিষ্কারাদেশটি জেলা কমিটি অনুমোদন করেছে বলেও জানান তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মা আর বড় বোনকে নিয়ে বাবা হারা এমদাদুলের সংসার। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের খরচ মিটাতে স্কুলের পাশাপাশি মহিষখোচা বাজারের চায়ের দোকান করে সে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যায় এমদাদুল। পরদিন সকালেই ফোন করে তাকে ডেকে নেন ওই বাজারের প্রভাবশালী মোখলেছার রহমানের ছেলে মহিষখোচা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক। এমদাদুল আসার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই আশিক তাকে টেনে পাশের বাগান বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে এমদাদুলের হাত-পা গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে জানতে চান যে মঙ্গলবার রাতে তার দোকানের পাশে রাখা বাইসাইকেলটি কোথায়? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এমদাদুলকে মারধর করে গলায় ছুরি ধরে হত্যার হুমকিও দেন ছাত্রলীগ নেতা আশিক ও তার লোকজন। একপর্যায়ে এমদাদুলের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় এমদাদুলের মা আঞ্জু বেগম বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে আদিতমারী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে বুধবার সন্ধ্যায় নিয়মিত মামলা হিসেবে গণ্য করেন আদিতমারী থানা পুলিশ। তবে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেশ্বর রায় বাংলানিউজকে জানান, অভিযোগটি তদন্ত করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

** স্কুলছাত্রকে গাছে বেঁধে ‘পেটালেন’ ছাত্রলীগ নেতা

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।