ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অন্যান্য দল

কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক আর নেই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক আর নেই

ঢাকা: বীর মুক্তিযোদ্ধা, খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ-মাহবুব) আহ্বায়ক আ ফ ম মাহবুবুল হক আর নেই।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কানাডার রাজধানী অটোয়ার সিভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বামপন্থি রাজনীতির এই পুরোধা ব্যক্তিত্ব।

বাসদের পক্ষ থেকে পার্টির আহ্বায়ক কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক এর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

 

দলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সন্তোষ গুপ্ত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শওকত হোসেন আহমেদ, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, ওয়াহিদুজ্জামান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক ছিলেন শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা। বিপ্লবী রাজনীতিতে তার আপোষহীন লড়াই এ দেশের বামপন্থি রাজনীতিকদের অনাদিকাল পথ দেখাবে। সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আজন্ম সেনানী এই বীর যোদ্ধার মৃত্যুতে দেশের বাম আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

গত সেপ্টেম্বরে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান মাহবুবুল হক। এরপর থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এর আগে ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর ঢাকায় অজ্ঞাত ঘাতকদের আঘাতে গুরুতর অবস্থায় দেশে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কানাডায় উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

আপসহীন সাবেক এই ছাত্রনেতা ১৯৪৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফজলুল হক ও মায়ের নাম মরিয়ামেন নেছা।  

এসএসসি ও এইচএসসিতে মেধার তালিকায় স্থান নিয়ে কৃতকার্য হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন।

আ ফ ম মাহবুবুল হক ১৯৬২ সালে স্কুল জীবনে শরীফ কমিশনের প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতি বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন ও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। তিনি ১৯৬৭-৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ সূর্যসেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।  

৬৮-৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য, ’৬৯-৭০ সালে কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফ’র অন্যতম প্রশিক্ষক ও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবুল হক। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ’৭৩-’৭৮ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।  

আ ফ ম মাহবুবুল হক ১৯৭৮-৮০ সালে ‘জাসদ’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ১৯৮০ সালের শেষের দিকে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ১৯৮৩ সালে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নিযুক্ত হন।  

আপোষহীন এই নেতা ১৯৬৮ সালে প্রথম কারাবরণ করেন। ’৭৬-৭৮ সাল পর্যন্ত পুনরায় রাজবন্দি হিসাবে কারাগারে কাটান। ১৯৮৬ সালে আবার কারাবরণ করেন। ১৯৯৫ সালে ঋণখেলাপি কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।