ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ছিল লোক দেখানো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ছিল লোক দেখানো মির্জা ফখরুল। ফাইল ফটো

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মাঝে বিএনপির ত্রাণ সামগ্রি বিতরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিই প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রোহিঙ্গাদের দেখতে যাওয়া ও ত্রাণ বিতরণ ছিল লোক দেখানো।

কারণ, মিয়ানমার থেকে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীনরা যদি আন্তরিক হতো তাহলে বিএনপির পক্ষ থেকে যাওয়া উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের ত্রাণ বিতরণে বাধা দিত না।

বুধবার  (১৩ সেপ্টেম্বর )  সন্ধ্যায় রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১০ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।

ফখরুল  বলেন, অসহায় রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ টিমকে কক্সবাজারের উখিয়া যেতে বাধা দেয়ার ঘটনায় সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।

এই মাত্র আমাদের কাছে খবর এসেছে, কক্সবাজারে আমাদের  যে  কেন্দ্রীয় রিলিফ টিম ২২টি ট্রাক নিয়ে গিয়েছিলো জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে, তাদেরকে উখিয়াতে প্রশাসন  যেতে দিচ্ছে না, পুলিশ ট্রাক আটকে দিয়েছে।   শুধু তাই নয়, কক্সবাজারে আমাদের বিএনপি অফিস পুলিশ ঘিরে রেখেছে। আমাদের শীর্ষস্থানীয়  নেতারা অফিস ঘরে আটকা পড়ে আছেন।

আমি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিএনপির ত্রাণ বিতরণে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করা হোক। অনাহারে জীবনযাপন করা রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে বিএনপিকে সুযোগ দেয়া হোক।

আগামি নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে সেই নির্বাচনের আগে নির্বাচনী পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে। সর্বপ্রথম বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় আপনারা (সরকার) যেভাবে গুম খুন মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছেন তার জন্য একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে।

তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না যে, ১/১১ সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায়। তারা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে হত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়ে মূলত প্রথমে গ্রেফতার, পরবর্তীতে নির্যাতন চালায়। আর এখন তাদের কুশীলবদের সাথে আঁতাত করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদেরকে সরাতে হবে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন প্রক্রিয়ায়। একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগকে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তাস্তরের জন্য বাধ্য করা হবে, যা বিএনপির দায়িত্ব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় এসে তারা (আওয়ামী লীগ) দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আজকে তারা বিচারবিভাগকে প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। সংসদকে বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছে। সংসদে একটি প্রস্তাব আনা হচ্ছে, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতির দেয়া রায় পর্যবেক্ষণ বাতিল বলে গণ্য করা হোক। এটা সুনির্দিষ্টভাবে সংসদকে বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো। বিএনপি এর নিন্দা জানাচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের হেয় করে রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিকে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে।   উদ্দেশ্য এই রাষ্ট্রকে তারা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে রাখতে চায় না, এটাকে একটা পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল দুর্বল জাতি হিসেবে রাখতে চায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার আবারও গায়ের জোরে এক তরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে নানান ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। উদ্দেশ্য জনগণ ও বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধুদের সাথে ফের প্রতারণা করে নির্বাচন দেয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনায় তিনি বলেন, আপনি বলেছিলেন চীন এবং ভারতের সাথে বর্তমানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। অথচ এখন দেখতে পাচ্ছি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ও ভারত মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়েছে। তাহলে কী প্রধানমন্ত্রীর চীন ও ভারত নিয়ে কথার কোন ভিত্তি নেই? যার প্রমাণ তারা (চীন ও ভারত) তো এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে নেই। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশের পাশে কেউ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা,  সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
এজেড /জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।