ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

জয়ের জন্য দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
জয়ের জন্য দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিজের ছেলে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) গণভবনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জয়ের জন্মদিনের কথা উঠে এলে শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে জয়ের জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, ‘আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইবো, জয়ের জন্য দোয়া করবেন। ’
 
১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই মু্ক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে শেখ হাসিনা ‍গৃহবন্দি থাকাকালে সজীব ওয়াজেদ জয় জন্মগ্রহণ করেন।


 
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় জয়ের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, এই ডিজিটাল বাংলাদেশ জয়ের কাছ থেকে শেখা। জয়ই আমাকে এ ব্যাপারে সব রকম পরামর্শ দিয়েছিলো। ’
 
মুক্তিযুদ্ধের সময় গৃহবন্দি থাকাকালে জয়ের জন্ম ও সেই সময়ের কষ্টের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, তার পরপরই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল। ’
 
তিনি বলেন, ‘এর কিছু দিন পরে মা, জামাল, রেহানা, রাসেলসহ ধানমন্ডির পুরনো ১৮ নম্বরের একটি ১তলা বাড়িতে আমাদের গৃহবন্দি করে রাখা হলো। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বন্দিখানায় ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে ফ্লোর, সেখানে আমাদের থাকতে হয়েছে। ’
 
‘অন্তসত্তা ছিলাম, খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো হতো না। ’
 
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জয়ের জন্মের সময় আমার মা হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলো, কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। মা যখন যেতে চেয়েছে, তখন পাকিস্তানি সেনা অফিসার বলেছিলো, আপনি তো নার্সও না ডাক্তারও না, আপনি গিয়ে কি করবেন। ’
 
‘যাই হোক ওই অবস্থায়ই জয়ের জন্ম হয়। ’
 
সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম রাখার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জয়ের জন্মের পর বন্দিখানার মধ্যে আমরা কিছুটা হলেও সজীবতা পেয়েছিলাম বলে মা তার নাম রেখেছে সজীব। ’
 
জয় নাম রাখার পেছনে একটা ইতিহাস রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ এর ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো। ’
 
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বাবা বলেছিলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, আমি থাকতে পারবো কিনা জানি না, দেখতে পারবো কি না জানি না, স্বাধীনতা আমরা অর্জন করবোই। আমি সে ব্যবস্থার সবই করে রেখে গেছি।
 
‘তোর ছেলে হবে, সে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হবে। ছেলে হলে তার নাম জয় রাখবি। ’স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
 
সবাইকে সততা ও ত্যাগের রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি একটাই, এদেশের মানুষের কল্যাণ করা। ’
 
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘একটা আর্দশ নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। দেশের মানুষকে কতটুকু দিতে পারলাম সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। ’
 
‘কি পেলাম সেটা বড় কথা না, মানুষের জন্য কি করলাম সেটাই একজন রাজনীতিকের নীতি হতে হবে। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনীতি দুই কারণে হতে পারে, একটা হলো যে, দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করবো, দেশের মানুষকে কি দিতে পারবো, দেশকে কিভাবে উন্নত করতে পারবো সেই চিন্তা নিয়ে। ’
 
‘আরেক ধরন আছে, কোন মতো রাজনীতি করে দুই পয়সা কামাই করে অর্থ সম্পদের মালিক হওয়া। ’
 
ন্যায় ও আর্দশের রাজনীতি করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আত্মত্যাগের মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করতে পারবে ও মানুষের সেবা করতে পারবে রাজনীতিতে তারা মানুষের মনে চিরদিন একটা সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করবে। ’
 
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশাসনিক দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হতো। ’
 
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা নিজের ভাগ্য গড়ার রাজনীতি করেন নাই। তিনি চেয়েছেন মহান ত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে। ’
 
‘জাতির পিতার জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ’
 
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা শুধু এদেশের স্বাধীনতার পথই দেখিয়ে যান নি, অর্থনৈতিক মুক্তির পথও দেখিয়ে গেছেন। ’
 
স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা পড়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
 
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
এমইউএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।