ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে নতুন চিন্তা নেই আ’লীগের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে নতুন চিন্তা নেই আ’লীগের

ঢাকা: নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে নতুন কোনো চিন্তা করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত নির্বাচনের মতোই আগামী নির্বাচনেও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থায় সংবিধানে নির্ধারিত পদ্ধতি বহাল রাখতে দৃঢ় অবস্থানে দলটি।

সংবিধানে নির্ধারিত সরকার ব্যবস্থার অধীনেই বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সরকার ব্যবস্থাকে না মেনে বিএনপি আগামী নির্বাচনও বর্জন করলে অবস্থান পরিবর্তন করবে না আওয়ামী লীগ।

বিএনপির নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি মানা না হলে গত নির্বাচনের মতো আগামী নির্বাচনও দলটি বর্জন করবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে। দাবি না মানলে আগামী নির্বাচনও বিএনপি বর্জন করতে পারে এ বিষয়টিও আওয়ামী লীগের চিন্তায় রয়েছে। তারপরও বর্তমান সাংবিধানিক ধারাকেই অব্যাহত রাখবে আওয়ামী লীগ।

সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি যে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের কথা বলছে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখাবে না। নির্বাচনের সময় সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনকালীন সরকারই দায়িত্ব পালন করবে।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে মন্ত্রিসভা রয়েছে সেই মন্ত্রিসভাই ছোট করে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
 
গত নির্বাচনের আগে ৫৮ সদস্যের মন্ত্রিসভাকে ছোট করে নির্বাচনকালীন সরকারের ২৯ সদস্যের মন্ত্রিসভা করা হয়। এর মধ্যে ৬ জন মন্ত্রী এবং ২ জন প্রতিমন্ত্রীকে নতুন করে অন্তর্ভ‍ুক্ত করা হয়। বাকিরা সবাই পুরোনো মন্ত্রিসভার সদস্য। ওই ২৯ সদস্যের মন্ত্রিসভার প্রত্যেকেই নির্বাচিত প্রতিনিধি অর্থাৎ জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তিন দিন আগে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব গ্রহণ করে।  

আগামী নির্বাচনেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এ ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানেই থাকবে আওয়ামী লীগ। এই পদ্ধতি মেনেই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। এতে বিএনপি নির্বাচনে না এলে তার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেবে না বলে নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন।

সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যেও এটা স্পষ্ট। তোফায়েল আহমেদ গত বোববার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি যে সহায়ক সরকারের কথা বলছে সেটা সংবিধানে নেই। সংবিধান পরিপন্থি কোনো প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হবে না। সংবিধান বিরোধী কোনো প্রস্তাব আমরা কখনই গ্রহণ করবো না। নির্বাচনে আসবে কি না সেটা বিএনপির বিষয়।

এদিকে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না বা গত নির্বাচনের মতো এবারও বর্জন করবে কি না তা নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা নিশ্চিত হতে পারছেন না।  

“আমরা আশাবাদী বিএনপি নির্বাচনে আসবে, মনে হয় না বিএনপি গতবারের মতো ভুল করবে”- আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা প্রায়ই প্রকাশ্যে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে এলেও বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয় নিয়ে ভেতরে ভেতরে তারা সংশয়ে আছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দলটির অবস্থান নির্বাচন বর্জনের দিকেই এগুচ্ছে বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র মন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ইদানিং বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা আদৌ নির্বাচনে যেতে চায় না। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতোই আগামী নির্বাচনও বর্জন করবে। মনে হচ্ছে বিএনপি আস্তে আস্তে সেদিকেই এগুচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭ 
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।