ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

নতুন নেতৃত্বে উজ্জীবিত ময়মনসিংহ আ.লীগ

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৬
নতুন নেতৃত্বে উজ্জীবিত ময়মনসিংহ আ.লীগ ফাইল ফটো

ময়মনসিংহ: দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন পোড় খাওয়া রাজনীতিক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। কিন্তু সময়ের চাহিদায় দলীয় রাজনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনতে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগে।

অভিজ্ঞতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও পজেটিভ ইমেজে ভর করে নতুন কমিটির সভাপতি হয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। দলটির সাধারণ সম্পাদক পদেও এসেছে চমক।

এ দায়িত্ব পড়েছে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের (আমোকসু) সাবেক ভিপি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের ওপর।

দীর্ঘ সময় পর নেতৃত্বে এমন প্রত্যাশিত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে দলটির অন্দরে-বাইরে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়া ত্যাগী নেতাদের মাঝেও আশার আলোর সঞ্চার হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, আর আব্দুল মতিন সরকার হন সাধারণ সম্পাদক। এরপর চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথা অনুযায়ী সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার কথা থাকলেও কমিটি বিলুপ্ত করেই আকস্মিকভাবে ঢাকায় ফিরে যান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

পরবর্তীতে কমিটি গঠন নিয়ে সৃষ্টি হয় ‘ভজঘট’ পরিস্থিতির। হচ্ছে, হবে করেও শেষ পর্যন্ত হচ্ছিলো না জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি।

অবশেষে গত রোববার (০৯ অক্টোবর) সকালে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়‍ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। গঠিত হয় মহানগর কমিটিও।

ধর্মমন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগে পদ হারালেও তার ছেলে মোহিত উর রহমান শান্ত মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর সভাপতি হয়েছেন জেলা শাখার সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম।

এদিকে আলোচনায় থাকা ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু দলীয় পদে না থাকায় হতাশ তার অনুসারীরা।

তবে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তার প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছেন, দলীয় পরিমণ্ডলে এমন খবরে সে হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে।

সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব হারানো ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভ‍ুক্ত করা হতে পারে। বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য রয়েছেন তিনি।  

নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এমন আওয়াজ দিচ্ছেন তার অনুসারী-অনুগামী নেতা-কর্মীরা।  

দলীয় সূত্র বলছে, সাংগঠনিক ও ভোটের রাজনীতিতে ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। আন্দোলন, লড়াই-সংগ্রামেও এখানকার আওয়ামী লীগের রয়েছে বীরত্ব গাঁথা ইতিহাস।

কিন্তু হাল আমলে গ্রুপিং-কোন্দলে নড়েবড়ে হয়ে উঠেছিলো দলটির সাংগঠনিক শক্তি। যার প্রভাব পড়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনেও।

তবে নেতারা বলছেন, জেলা ও মহানগর কমিটি ঘোষণার পর দলীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। পুর‍ানো ও ত্যাগী নেতা-কর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলকে পেয়ে দারুণ খুশি।

বিশেষ করে সম্মেলনের সময় থেকেই নেতৃত্বে দৌড়ে এগিয়ে থাকা এ দুই নেতার নেতৃত্বে দলে নতুন মেরুকরণের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করেন তারা।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রফিক বাংলানিউজকে বলেন, দলে নতুন নেতৃত্বে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে।

যোগ্যতাসম্পন্ন, পরীক্ষিত ও জনসম্পৃক্ত নেতৃত্ব উঠে আসায় দলের সাংগঠনিক ভিত্তিও মজবুত হবে বলে মনে করেন তিনি। একই মন্তব্য নতুন কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আহাম্মদ আলী আকন্দেরও।

বাংলাদেশ সময় ১৬৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৬
এমএএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।