ঢাকা: প্রতিবেশী দেশ ভারতকে ট্রানজিট ও করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঈদের পর সরকারবিরোধী লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
ঈদের আগে বা পরে এ নিয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে পৃথক দুই লংমার্চ কর্মসূচি আয়োজনের চিন্তাভাবনা চলছে।
তিনি জানান, ঢাকা-সিলেট লংমার্চে টিপাইমুখে ভারতের বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি হবে প্রধান ইস্যু। আর চট্রগ্রাম অভিমুখী লংমার্চে প্রধান ইস্যু হবে ভারতকে দেওয়া চট্টগ্রাম ও মংলাবন্দর ব্যবহারের অনুমতি বাতিলের দাবি।
তবে উভয় কর্মসূচিতেই ট্রানজিটের নামে ভারতকে করিডোর দেওয়া বন্ধ ও ভারতের সঙ্গে করা দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ সব চুক্তি বাতিলের দাবি তোলা হবে।
কবে নাগাদ লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে জানতে চাইলে কিছুটা কৌশলে উত্তর দেন স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের নীতিবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছি। ক’দিন আগেই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণমিছিল করলাম। আমরা আরও কর্মসূচি দেবো। অবশ্যই সে কর্মসূচি কঠিন হবে। ’
স্থায়ী কমিটির অপর এক সদস্য বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘গত ৯ আগস্ট গণমিছিল-পূর্ব বক্তব্যে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াই লংমার্চ কর্মসূচির প্রেক্ষাপট তৈরি করে রেখেছেন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘হরতাল কর্মসূচিতে পুলিশ বাহিনী ও ক্যাডারদের হামলা-নির্যাতনের পর থেকেই বিএনপি বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবছে। গণমিছিল সেই ভাবনারই ফসল। এখন দলের হাই কমান্ড লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণার কথা ভাবছে। ’
ভাইস চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘এরকম (লংমার্চ) কর্মসূচির কথা শুনেছি। তবে বিষয়টি দলের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে আছে। শিগগিরই জানতে পারবেন। ’
সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) এম ইলিয়াস আলী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘দেশ রক্ষায় গণমিছিল হয়েছে। আগামীতে আরও কর্মসূচির জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। ঈদের পর কঠোর কর্মসূচি আসছে। আমরা চেয়ারপারসনের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। ’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দিন-তারিখ এখনই ঘোষণা করা না হলেও ‘ঈদের পর লংমার্চ’ বলে আলোচনা চলছে দলীয় পরিম-লে।
সূত্র জানায়, নেতাকর্মীদের মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারাই লংমার্চের খবর ছড়াচ্ছেন। অল্প সময়ের নোটিশে নেতাকর্মীরা যাতে ‘লংমার্চ প্রস্তুতি’ নিতে পারেন সেজন্যই এ কৌশল।
সম্ভাব্য দুই লংমার্চ কর্মসূচিতে প্রধান ইস্যু ছাড়াও গত ৯ আগস্ট গণমিছিলে তোলা ১৩ দফা দাবিও ইস্যু করা হবে।
এসব দাবির মধ্যে রয়েছে সরকারের অন্যায় অত্যাচার, হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি বন্ধ, দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ, দলের নেতাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১০