ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বরিশালে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আটকে আ’লীগের জনসভা

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১১
বরিশালে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আটকে আ’লীগের জনসভা

বরিশাল: বরিশাল নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক সদর রোড (বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর সড়ক) আটকে রেখে দীর্ঘ সোয়া ৪ ঘণ্টা জনসভা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

শনিবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে যানচলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হন পথচারীরা।

পাশাপাশি এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

সারা দেশব্যাপী বৃহত্তর জেলাগুলোতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সফরের অংশ হিসেবে এ জনসভার আয়োজন করে বরিশাল জেলা ও মহানগর আ’লীগ।

বরিশাল জেলা ও মহানগর আ’লীগের কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় নেতা জানান, স্বাধীনতা বিরোধী যড়যন্ত্রকারীতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য প্রতিহত করার জন্য কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বরিশালে জনসভার আয়োজন করা হয়। সদর রোডে অশ্বিনী কুমার হল চত্ত্বরের সামনে করা হয় সভার মঞ্চ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভোগান্তির শিকার পথচারীরা জানান, দুপুর আড়াইটার পর থেকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের মোড় থেকে বিবির পুকুরের পশ্চিমপাড় পর্যন্ত সকল যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

এর ফলে যানবাহনের তীব্র চাপ পড়ে বগুড়া রোড, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, লাইন রোড, চকবাজারসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়কে। বরিশাল জিলা স্কুল ও সদর গার্লস স্কুলে পরীক্ষা থাকায় ঘরমুখী শিক্ষার্থী আর অভিভাবকের চাপে বিকেলের দিকে যানবাহন পরিস্থিতি আর সংকটজনক হয়ে পড়ে।

এসময় অনেককে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। শহরের প্রধান সড়ক আটকা পড়ায় সিটি সার্ভিসের গাড়ি গলির ভেতর ঢুকে পড়ে। ফলে সেখানেও সৃষ্ঠি হয় যানজটের।

দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া জনসভা সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় শেষ হলেও যানযটের রেশ রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলছিল।

তবে সদর রোডে জনসভা করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার জন্য নগরবাসীর কাছে জনসভায় বসেই ক্ষমা চেয়েছেন বরিশাল মহানগর আ’লীগের আহবায়ক সিটি মেয়র শওকত হোসেন। তিনি বলেন, জনসভা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে করার কথা ছিলো। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কাদার সৃষ্টি হওয়ায় বাধ্য হয়েই সদর রোডে করতে হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সদর রোড আটকে রেখে জনসভা করায় শহরের স্বাভাবিক যান চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটে।

এদিকে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন মাত্র ২ মিনিটের বক্তৃতায় বলেন, ‘পৃথিবীর কোথায়ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে তাদের জামিন বা আপিল করার কোন বিধান নেই। তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কোনও মহল যাতে প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্য বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলাকালীন সময় তাদের আপিল বা জামিন আবেদনের বিধান রেখেছে। ’

কেন্দ্রীয় আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের এখন সময় হয়েছে জনগণের কাছে হিসেব দেওয়ার। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করেন। তাই দেশের সব কিছুতেই ডিজিটাল করনের মাধ্যমে জনগণের সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি থাকলে গত আড়াই বছরে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি পূরণ হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতেও একই অবস্থা। বিএনপি-জামায়েত সরকার ২১-২৫ মেগাওয়াট বিদু্যুৎ রেখে গেলেও বর্তমান সরকার জাতীয় গ্রিডে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করেছে। ৩৯টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

অপর বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘আমরা এমএ আজিজ মার্কা নির্বাচন করতে চাই না। আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাচ্ছেন একটি স্বচ্ছ নির্বাচন। আমরা গণতন্ত্রকে সেনাক্যাম্প থেকে মুক্ত করেছি। পবিত্র সংবিধান ফেলে দেওয়ার জিনিস না। যারা সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিতে চায় তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। ’

তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এখনও সময় আছে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তা না হলে বাংলাদেশের জনগণ আগামী নির্বাচনে আপনাকে ছুড়ে ফেলে দেবে। ’

বরিশাল মহনগর আ’লীগের আহবায়ক সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সংসদ সদস্য অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস, অধ্যক্ষ শাহ আলম, একেএম আউয়াল, পারভীন তালুকদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, ৩০ জুলাই, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।