ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আগাম নির্বাচনের ভাবনা নেই সরকারের

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
আগাম নির্বাচনের ভাবনা নেই সরকারের

ঢাকা: নির্ধারিত সময়ের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুঞ্জন উঠলেও সরকারের এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন দলের সংশ্লিষ্টরা। সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও অনড় আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে এমপিদের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনার গুঞ্জন ওঠে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারেরর নির্ধারিত মেয়াদ শেষেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতির যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেটা নির্বাচনের জন্য আগে থেকেই দলকে প্রস্তুত করতে।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধানে এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের কথা রয়েছে। সেই নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে বলে ওই নেতারা জানান। যে প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে তার মধ্যে দু’টি লক্ষ্য রয়েছে। একটি হলো প্রশাসনের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবেও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে দল মাঠে নামলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতার মধ্যে থাকবে। যেটা জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের জন্য সহায়ক হবে।

অপরদিকে দল ক্ষমতাসীন থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গা-ছাড়া ভাব রয়েছে। এই গা-ছাড়া ভাব কাটিয়ে উঠতে এবং নির্বাচনের তিনমাস আগে নির্বাচনের জন্য দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত করতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের যে ধারা চালু হয়েছে তা থেকে সরে আসবে না আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান মেনেই বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। না মানলে বিএনপিকে ছাড়াই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে যথা নিয়মেই হবে। আমরা সংবিধান অনুযায়ী এগোচ্ছি। নির্বাচনে কোনো দল এলো কি না এলো সেটা ওই দলের ব্যাপার। আমাদের কোনো ব্যাপার না।

বুধবার (২৭ জুলাই) ১৪ দলের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এখন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে তাহলে আগাম নির্বাচন হচ্ছে কিনা। এসময় নাসিম বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, নির্বাচন সময় মতোই হবে। আর কিছু বলতে চাই না।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আগাম নির্বাচনের জন্য সরকার কোনো চাপও অনুভব করছে না। এ জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার মতো রাজনৈতিক শক্তি-সামর্থ্যও বিএনপির নেই।

তাছাড়া নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপও কাটিয়ে উঠতে সরকার সক্ষম হয়েছে বলে দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। দেশের মধ্যে জঙ্গি-সন্ত্রাস প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপ এবং উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকার ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। চলতি মাসে মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসেম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিলে সেখানে বিশ্ব নেতারা জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনে তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

এর আগে জাপানে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাতে প্রভাবশালী দেশগুলোর কাছ থেকে সরকারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০২৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।