ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বরিশালে হরতালে গাড়ি ভাঙচুর

কাওছার হোসেন, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১১

বরিশাল: বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতাল বরিশালে ২য় দিনের বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে।

হরতালের প্রথম দিন বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত পর্যন্ত প্রায় ৩০টি যানবাহনে ভাঙচুর চালানো  হয়েছে।

এছাড়া আরো কয়েকটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় বিএম কলেজের প্রথম গেট থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নতুন বাজার এলাকায়  পৌঁছালে মিছিলে থাকা পিকেটাররা দোকানপাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালান।

সে সময় ৭/৮টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ৩/৪টি মাহেন্দ্র আলফা ও ৮/১০টি রিক্সা ভাঙচুর করা হয়।

রাত ৯টায় হাতেম আলী কলেজ এলাকা থেকে একটি মিছিল বের হয়ে যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। এছাড়া রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল রোডে একটি অটোরিক্সায় অগ্নিসংযোগ করেন পিকেটাররা।

এদিকে বুধবারের মতো বৃহস্পতিবার সকালেও হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছে বরিশাল বিএনপির বিবাধমান দু’গ্রুপের একটি পক্ষ।

সকাল সাড়ে ৬টায় নগরীর হাসপাতাল রোডে বের হওয়া মিছিলটির নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সরোয়ার, এমপি।

এছাড়া নগরীর বাজার রোড এলাকায় সকাল ৭টায় মিছিল করেছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, হরতালে পিকেটিং ঠেকাতে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে পুলিশ সদস্যের সংখ্যা প্রথম দিনের তুলনায় কম।

রাস্তায় পুলিশ ও র‌্যাবের টহলও কমে গেছে।

যে সব পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, তা হচ্ছে, নগরীর সদর রোড, নথুল্লাবাদ, লঞ্চঘাট, রূপাতলী, জেলখানার মোড়, নাজিরার পুল, নতুনবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

তবে অপর উল্লেখযোগ্য এলাকা বাংলাবাজার, আমতলার মোড়, বিএম কলেজ, চকবাজার, কাকলীর মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য চোখে পড়েনি।

সকাল থেকে পুলিশ বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও করে রাখলেও সেখানে কোনো নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায় নি।

অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় একযোগে বরিশাল লঞ্চঘাট ত্যাগ করেছে অভ্যন্তরীণ রুটের ৫টি লঞ্চ। এরপর সকাল ৮টা পর্যন্ত ছেড়ে যায় আরো ৩টি লঞ্চ।

পর্যায়ক্রমে অভ্যন্তরীণ ১০টি রুটের সবকটি লঞ্চ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল লঞ্চ মালিক সমিতির যুগ্ম-আহ্বায়ক খোরশেদ আলম।

নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বাসও ছাড়ে নি। এছাড়া ২য় দিনেও বন্ধ রয়েছে দূর পাল্লার রুটের সকল বাস।

বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন দাবি করেছেন, যাত্রী সঙ্কটের কারণে বাস চলাচলে একটু বিঘœ হচ্ছে। তবে বাস ছাড়বে।

এদিকে সরেজমিন দেখা যায়, বাসগুলো এলোমেলোভাবে পুরো বাসস্ট্যান্ড জুড়ে রাখা হয়েছে। রাস্তার ওপরও থামিয়ে রাখা হয়েছে আরো কয়েকটি বাস। যাত্রী ভিড় করে থাকলেও একটি বাসও ছাড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

ফলে, যাত্রীরা বাধ্য হয়েই বিকল্প যান টেম্পু, মাহেন্দ্র আলফা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটছেন। এতেও তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।

তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের জিম্মি করে অন্যান্য সময়ের তুলনায় দুই থেকে তিনগুন ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে নথুল্লাবাদ থেকে কোনো বাস না ছাড়লেও রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ৯টি বাস ছেড়েছে।

এর মধ্যে ৪টি বরিশাল-ঝালকাঠী-ভাণ্ডারিয়া রুটের এবং বাকি ৫টি বরিশাল-বাকেরগঞ্জ রুটের।

বাস চলাচল ব্যাহত হলেও নগরীতে রিক্সা চলাচল রয়েছে স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।