ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অন্যান্য দল

‘মশাল’ আমার, কেড়ে নেওয়া যাবে না, ইসিকে বাদল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
‘মশাল’ আমার, কেড়ে নেওয়া যাবে না, ইসিকে বাদল

ঢাকা: সংসদ সদস্য মঈনুদ্দীন খান বাদল বলেছেন, যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নেওয়া যাবে না। কাজেই মশাল প্রতীক আমার।

 

বুধবার (০৬ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতীক নিয়ে বিরোধের শুনানি শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
 
তিনি বলেন, জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির গত ১২ মার্চের কাউন্সিল করতে ব্যর্থ হয়েছেন হাসানুল হক ইনু। সেই কাউন্সিলে যে অগণতান্ত্রিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে সাধারণ সম্পাদক (শরীফ নুরুল আম্বিয়া) কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সে মুহূর্তে আমাদের দুটো পথ খোলা ছিল। প্রথমত সরাসরি সংঘাতে যাওয়া, দ্বিতীয়ত গণতান্ত্রিক বিধি-বিধান মেনে কাউন্সিল পরিত্যাগ করা। আমরা সে মোতাবেক পরিত্যাগ করেছি।

তিনি বলেন, জাসদের কাউন্সিলর সংখ্যা ১ হাজার ২৩৬ জন। সেখানে তারা (শিরীন আখতার) ৬০৩ ভোট পেয়েছেন, বাকিরা কোথায় গেছেন? জাসদে ছয়জন এমপি আছেন। ৪ জন আমাদের সঙ্গে। তারা হলেন, লুৎফা তাহের, রেজাউল করিম তানসেন, মঈনুদ্দীন খান ও নাজমুল হক প্রধান।

বাদল বলেন, জাসদের সর্বোচ্চ কমিটি হচ্ছে স্থায়ী কমিটি। এ কমিটির সদস্য ১৫ জন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন, একজন নিরপেক্ষ এবং একজন অসুস্থ। বাকি ১২ জনের মধ্যে ৭ জন আমাদের সঙ্গে আছেন। সারাদেশের সাংগঠনিক ৭৯টি জেলা কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের সরাসরি সমর্থন করেছে। বাকিগুলো মিশ্রিত।
 
আমরা শুনানিতে সেসব তালিকাও নির্বাচন কমিশনে দিয়েছি।

তিনি দাবি করেন, আমরা মশাল প্রতীক পাবো। জাসদের যে ছয়জন সংসদ সদস্য আছেন, তাদের মধ্যে দু’জন সরাসরি মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আমাদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান ও রেজাউল করিম তানসেন মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এগুলো বিরাট ফ্যাক্টর হিসেবে অবস্থান করছে।

জাসদের এই নেতা বলেন, আমি তো বারংবার বলছি, মশাল প্রতীক আমার। পার্লামেন্টারি প্র্যাকটিসের কথা বলছি। নাজমুল হক প্রধান মশাল প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। ইফ ইউ উইথড্র ‘মশাল’ হোয়াট উইল বি হিজ স্ট্যাটাস! আমর স্ট্যাটাস কিচ্ছু হয় না। আমি তো নৌকায় উঠে গেছি। ইনু সাহেবও নৌকায় উঠে গেছেন। শিরীনও নৌকায় উঠে গেছেন। কিন্তু যারা মশাল নিয়ে লড়াই করে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে আপনি মশাল নিতে পারবেন না।
 
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাই মূল জাসদ, এটা বারবার জোরে জোরে বলার দরকার নেই। চলমান ইউপি নির্বাচনে আমরা চেয়ারম্যান প্রার্থী দিয়েছি। মশাল প্রতীকের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেছেন তারা। তারা নির্বাচিত হওয়ার পর আমাদের কতোজন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন, তা তালিকা দিয়ে জানাবো।
 
শুনানি শেসে ইসি’র রায় মনোপুত না হলে কি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতে যাবো কি-না তার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।
 
তবে দলীয় কার্যালয় দখলে যে ইতরামি হয়, মারামারি হয়, সে প্রক্রিয়ায় আমরা যাবো না। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় অফিস দখলের প্রচেষ্টা চালাব।
 
নির্বাচন কমিশন আমাদের বক্তব্য শুনেছে এবং আরো কিছু জানার থাকলে জানতে চাইবে। প্রত্যাশা করি, ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সমর্থ হবে।
 
বিকাল ৩টায় শুনানি শুরু হয়ে বিকাল চারটায় শেষ হয়। এতে দলটির একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানসহ অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
 
এর আগে সকালে ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদের অংশের সঙ্গেও শুনানি করে ইসি। শুনানি শেষে ইনু ইসি’র কাছে সুবিচার পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
 
গত ১২ মার্চ দলটির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিরোধের জের ধরে আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি অংশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেরা একটি কমিটি গঠন করে। এদিকে ইনুর নেতৃত্বেও একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু চলমান ইউপি নির্বাচনে দু’পক্ষই তাদের সমর্থিত প্রার্থীদের ‘মশাল’ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানায়। তাই ‘মশাল’ এর প্রকৃত মালিক কে তা নির্ধারণেই এই শুনানি করলো নির্বাচন কমিশন।
 
তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হবে বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল)।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর

** মশাল নিয়ে এবার শুনানিতে বাদল-প্রধান
** ‘মশাল’ নিয়ে ইসি সুবিবেচনা করবে
** শুনানিতে ইনু-শিরিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।