ঢাকা: অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরাই সংবিধান ছুঁড়ে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ‘সংবিধান একটি পবিত্র গ্রন্থ, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একটি সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গত বুধবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স চত্বরে বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচিতে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে আমরা সংশোধিত সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে দেব’।
আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার বার্ষিকীতে কর্মসূচি ঠিক করতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের উদ্যোগে এই যৌথ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হানিফ আরও বলেন, ‘বিচাপতি এবিএম খায়রুল হক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের মামলার রায় দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া খুনীদের রক্ষা করতে পারেনি বলেই তার প্রতি বিষেদাগার করে চলেছেন। ’
হানিফ বলেন, ‘আদালতের রায়ের ভিত্তিতে এবং সংসদে আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে। খালেদা জিয়া এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। মূলত তিনি তার দুই ছেলেকে রক্ষা করতেই একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে চলেছেন। আমরা আশা করব, তিনি এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে সংসদে গিয়ে ফর্মুলা দেবেন। ’
শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনের ঘোষণাকে ধন্যবাদ জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘গত হরতালগুলোতে জ্বালাও-পোড়াও তার নির্দেশেই হয়েছে। ’
যারা আগুন দিয়ে মানুষ খুন করেছে সেই সব নেতা-কর্মীকে তিনি আইনের হাতে সোপর্দ করারও আহ্বান জানান।
ফারুকের ওপর পুলিশি হামলা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ‘উনি একজন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ। সংসদ অধিবেশন চলাকালে সংসদ এলাকায় মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ এ বিষয়টি তার জানা না থাকা লজ্জাজনক। একই সঙ্গে একজন সাংসদ লাঞ্চিত হওয়াও লজ্জার। ’
মিছিল থেকে ফারুক গাড়ি ভাঙচুরের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা বিভিন্ন টিভি মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
হানিফ বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত পুলিশ এবং দলীয় লোক দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত এবং ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকেও খুন করা হয়। বিষয়গুলো সংসদে উত্থাপন করতে দেননি তারা। ’
ফারুকের ব্যাপারে বিচার চাওয়া লাগবে না, বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করা হবে বলে জানান তিনি।
হানিফ বলেন, ‘স্বাধীনতা বিরোধীরা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে এবং শেখ হাসিনাকে ২২ বার হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড দিয়ে হামলা করা হয়। ’
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাসিম, বিএম মোজাম্মেল, এমএ মজিদ বুলু মিয়, ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুলসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আগামী ১৪ জুলাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবরে শ্রদ্ধা ও মোনাজাত; ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাতীয় পতাকা অধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন, বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন, ১৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সকালে অস্থায়ী শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও নীরবতা পালন এবং আলোচনা সভার ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৬ ও ২১ আগস্ট দুটি আলোচনাতে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়।
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে এসব কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অনুষ্ঠান করার আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ১৪ জুলাই, ২০১১