ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দমন পীড়ন চালিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১১
দমন পীড়ন চালিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না: ফখরুল

ঢাকা: ‘সমগ্র দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও শাস্তি দিয়ে, দমন পীড়ন চালিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।



এ বক্তব্য প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে রোববার খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্তি ও পরবর্তীতে বিক্ষোভ মিছিলে ককটেল হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর বিএনপি এ সমাবেশ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমানকে মূলত আওয়ামী লীগ ভয় পায়। কারণ, জিয়া পরিবার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সেই পরিবারের প্রতিনিধি তারেক রহমান যদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্ব মহিমায় আবির্ভূত হতে পারেন তাহলে বিদেশিদের আজ্ঞাবহ কোন শক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পাবে না। এ ভয়েই তারেক রহমানকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে চায় না তারা। তাই যখনই তার আসার কথাবার্তা শুরু হয়, তখনই তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দেওয়া হয়। ’

তিনি বলেন, ‘আজ দেশের ডান ও বাম উভয় পন্থীরাই সরকারের কর্মকা-ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। কারণ, রাষ্ট্রীয় সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার উঠিয়ে দিয়ে সেখানে ক’জন ব্যক্তির নাম ও বক্তৃতা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যা এ দেশের ডান ও বামপন্থী কোন মানুষই মেনে নিতে পারছে না। তাই ৬ ও ৭ জুলাই হরতালে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে জনগণ সরকারকে জানিয়ে দেবে তাদের এই সংবিধান সংশোধন তারা মেনে নেয়নি। মূলত সমগ্র দেশের মানুষ আজ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। তাই তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। ’

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৩ জন সাবেক আইজিপিসহ অনেক কর্মকর্তাকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আসামি করা হয়েছে। কারণ, তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। ’

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত থাকলে তার নাম বের করতে সাড়ে ৪ বছর লাগতো না । ’

‘তৃণমূল থেকে বিএনপিকে শক্তিশালী করার কারণেই তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়’ বলেও মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘হামলা মামলা দিয়ে কোনো দিন জনগণের আন্দোলন দাবিয়ে রাখা যায়নি। এবারও রাখা যাবে না। সামনের দিন জগণের দিন। সামনের দিন বিএনপির দিন। ’

ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান পটল, ডা. এজেডএম  জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, রোববার ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’ বিশেষ পুলিশ কমিশনার আব্দুল কাহার আকন্দ স্বাক্ষরিত সম্পূরক চার্জশিট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দাখিল করেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক গোলাম মাওলা।

চার্জশিটে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীসহ ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এই চার্জশিট দাখিলের প্রতিবাদে বিকেল ৫টার দিকে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিলটি তোপখানা রোডস্ত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এলে পর পর পঁাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় টেলিভিশনের ক্যামেরা সাংবাদিক মঞ্জুর ও ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুলসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১১,

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।