ঢাকা: জাতীয় সংসদে উত্থাপিত সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী বিলকে মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি লঙ্ঘন করে সাম্প্রদায়িক নীতির কাছে আত্মসমর্পণ বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
এই বিলে সামরিক স্বৈরশাসকদের জারি করা বিধানকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে এবং এটা মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তিকেই মদদ জোগাবে বলেও সিপিবির অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে সিপিবির পক্ষ থেকে রোববার দেওয়া এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, অতীতে সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের জারি করা ‘রাষ্ট্রধর্ম’ এবং জিয়ার জারি করা ‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল-সংগঠন করার অধিকার’- এর বৈধতা দেওয়া হয়েছে এই বিলে। এটি শুধু হাইকোর্টের রায়েরই বরখেলাপ নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান জাতীয় সংসদ ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই দেশকে ৪০ বছর পর পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করলেও দেশবাসী তা মেনে নেবে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সিপিবিসহ বিভিন্ন দল, সংগঠন, ব্যক্তিবর্গ ’৭২-এর সংবিধানের মূলনীতি সমুন্নত রেখে অতীতের ত্রুটি দূর এবং সংবিধানকে আরও উন্নত করার প্রস্তাব দিলেও ক্ষমতাসীনরা তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধনের নামে সাম্প্রদায়িক নীতির কাছে যে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নিলেন তা মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তিকেই মদদ জোগাবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংবিধান সংশোধনী বিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় বাস্তবায়ন না করে দেশকে সংঘাতের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
’৭২-এর সংবিধানের মূলভিত্তি প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকারী দল, শক্তি ও ব্যক্তিবর্গকে ’৭২-এর সংবিধানের মূলভিত্তি রক্ষা মঞ্চ’ গঠন করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান হয়।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরে যাওয়ার ১৫তম সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে সিপিবি ২৬ জুন রোববার বিকেল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করবে।
এই দাবিতে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠিত করার জন্য পার্টি ও সমমনা দল ও ব্যক্তিবর্গের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিপিবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১১