ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দুই ছাত্রজোট আবারো মাঠে নামছে

রিয়াজ রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১১
দুই ছাত্রজোট আবারো মাঠে নামছে

ঢাকা: জাতীয় রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হচ্ছে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা দুই বৃহৎ ছাত্রজোট। এদের একটি ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্রজোট, অপরটি ছাত্রদলের নেতৃত্বাধীন সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য।



গোয়েন্দা সূত্রমতে, সামনের দিনগুলোতে সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করতে এরই মধ্যে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের সংগঠনগুলো নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা সেরে নিয়েছে। তবে সরকার বিরোধী আন্দোলন ঠেকানোর প্রত্যয়ে একটু রয়ে-সয়েই এগুচ্ছে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ছাত্রজোট।

ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১৯৯৯ সালের মাঝামাঝিতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চাঙ্গা করতে গঠন করা হয় সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য। বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের নেতৃত্বে সমমনা আরো পাঁচটি সংগঠন নিয়ে এ জোট গঠিত হয়।

তখন এ জোটে ছিলো ইসলামী ছাত্রশিবির, জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় ছাত্রদল।

অপরদিকে প্রায় একই সময়ে বিরোধী দলের আন্দোলন প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সমমনা ছয়টি ছাত্র সংগঠন নিয়ে গঠিত হয় সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্রজোট।

এ ছাত্রজোটের অন্য সংগঠনগুলো হলো- ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন ও জাসদ ছাত্রলীগ।

পরে পরিবর্তিত রাজনৈতিক  প্রেক্ষাপটে এ দুই জোটই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় তারা আবারো নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, যুগপৎ আন্দোলনের জন্য এখন থেকেই ‘ওয়ার্ম আপ’ শুরু করেছে ছাত্রদল। সম্প্রতি পুরানা পল্টনের এক রেস্টুরেন্টে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও শিবিরের এক শীর্ষ নেতা এ ব্যাপারে প্রাথমিক করনীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক শীর্ষনেতা বাংলানিউজকে জানান, রোজার ঈদের পরপরই হরতালসহ বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচিতে মাঠে নামবে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য। জুলাইয়ের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।

তিনি আরো জানান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির তিনজন সহ-সভাপতি এ নিয়ে কাজ করবেন। তারা প্রথমে বিভাগীয় পর্যায়ে, পরে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে ছাত্রঐক্যের কমিটি গঠন করে পরবর্তী করনীয় ঠিক করবেন।

তবে এর আগে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম বাংলানিউজকে বলেন, ‘সমমনা ছাত্র সংগঠনগুলো নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের চিন্তা চলছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই। তাই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অনেক রকম সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। ’

এদিকে রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্রজোট।

ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বাংলানিউজকে জানান, ছাত্রলীগ আপাতত সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে। তবে আন্দোলন বিরোধী কার্যক্রম গ্রহণের চিন্তাও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

আন্দোলনের ধরন ও করনীয় ঠিক করতে সম্প্রতি সমমনা ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলানিউজকে তিনি আরো জানান, আগামী ১১-১২ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় কাউন্সিল। এরপর নতুন কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা আপাতত নিজেদের ঘরগোছাতে ব্যস্ত রয়েছেন।

সূত্রমতে, কাউন্সিল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যস্ততার মধ্যেও ফোনে কিংবা মধুর কেন্টিনের আড্ডায় এ ছাত্রজোটের সংগঠনগুলোর নেতাদের কথায় উঠে আসছে বিরোধী দলের ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচি মোকাবেলা প্রসঙ্গ। আলোচনা হচ্ছে সম্ভাব্য কৌশল নিয়েও।

ছাত্রলীগের অপর এক নেতা বাংলানিউজকে জানান, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর ও জেলাতে ছাত্রজোটের কমিটি গঠন করে রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন মোকাবেলা করা হবে।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার রোটন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিরোধী দলের যেকোন নৈরাজ্য ঠেকাতে সমমনাদের নিয়ে একসাথে কাজ করবো। ’

তিনি আরো বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজপথে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে ছাত্রলীগ। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।