ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্যাতনের ইতিহাস নতুন নয়: মান্না পুরাতনকে ধরে রাখব কেন?: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১১
নির্যাতনের ইতিহাস নতুন নয়: মান্না পুরাতনকে ধরে রাখব কেন?: ফখরুল

ঢাকা: নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদর রহমান মান্না বলেছেন, ‘নির্যাতনের ইতিহাস নতুন নয়। এটি অনেক পুরোনো।

সব সরকারের আমলেই এ নির্মমতা চলেছে। এখনো চলছে। ’

একই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বহুদিনের পুরোনো এ নির্মমতা থেকে আমরা কেন বেরিয়ে আসছি না? কেন এ মাত্রা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে? বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে মানবাধিকার রক্ষায় গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করবে। ’

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ‘অধিকার’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় তারা এ কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্যের শুরুতেই দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পরও দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, মাহমুদুর রহমানের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা সত্যিই নিন্দনীয়। কোনো সভ্য সমাজে এটি হতে পারে না। তবে নির্যাতনের এ ইতিহাস নতুন নয়। অনেক পুরোনো। ’

ছাত্র আন্দোলনের সময় নিজের ওপর শাসক দলের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজ তো রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওই সময় আদালতের অনুমতিও প্রয়োজন হতো না। এখন চোখ বেঁধে কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। কিন্তু ওই সময় হাত-পা-চোখ বেঁধে টানা ১৫ থেকে ২০ দিন ফ্লোরে ফেলে রাখা হতো। ’

এ ক্ষেত্রে তিনি ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মোস্তাকের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।

মান্না বলেন, ‘আজ বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আন্দোলন করছে। কিন্তু মানবাধিকর, দ্রব্যমূল্য, ইকোনোমিক টর্চার নিয়ে তাদের কোনো কর্মসূচি নেই। তারা কেবল নেতা-নেত্রীর সম্পদ রক্ষা ও লাভালাভের ইস্যুতে আন্দোলন করে জনগণের কী উপকারটা করছে তা বুঝতে পারছি না। ’


মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যের পর আলোচনায় অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথমেই বলেন, ‘মান্না আওয়ামী লীগের কোনো জায়গায় এখন নেই। তাই খুব সহজেই তার কথাগুলো বলে  যেতে পারলেন। কিন্তু আমার পক্ষে ওভাবে বলার কোনো সুযোগ নেই। ’

আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি অনেকটাই মানবিক দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি অনেকটাই মানবিক ও সহিঞ্চু। ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত কেবল দেশের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলার জন্য হাজার হাজার লোককে রক্ষীবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ’

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এক রকম না ভাবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই বিরোধী মতের মানুষদের গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হতে হয়। এবার তারা ক্ষমতায় এসে চৌধুরী আলমকে গুম করেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহসানুল হক মিলনকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক রেখেছে। আব্দুস সালাম পিন্টু, নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবরকেও একই ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। তারপরও আগামীতে ক্ষমতায় গেলে পুরোনো এই ধারার পরিবর্তন এনে বিএনপি মানবাধিকারের পক্ষে কাজ করবে। ’

অধিকারের উপদেষ্টা ফরহাদ মজহারের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিপ্লবী ওর্য়াকাস পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে নিহত মনিরুজ্জামান রুবেলের বড় ভাই ইকবাল হোসেন রাসেল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।