ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

কোকোর দণ্ড রাজনীতিকদের জন্য সতর্ক সংকেত: আশরাফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১১
কোকোর দণ্ড রাজনীতিকদের জন্য সতর্ক সংকেত: আশরাফ

ঢাকা: অর্থপাচারের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দণ্ডিত হওয়া ঘটনাকে ‘রাজনীতিকদের জন্য সতর্ক সংকেত’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

আদালতে কোকো দণ্ডিত হওয়ার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুক্রবার বিকেলে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।



সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘এতে (রায়ে) উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। আমি এতে উল্লসিত হই না। আমি দু:খিত। কারণ, আমরা যদি আমাদের সন্তানদের  যথাযোগ্য করে গড়ে তুলতে না পারি, মানুষের মতো মানুষ করতে না পারি- তাহলে তার পরিণতি ভালো হয় না। এটা এই রায়ের মধ্য দিয়েই প্রমাণ হয়েছে। ’

কোকোর মামলায় সরকারের  সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কোকোর মামলায় সরকারের কোনও হস্তপেক্ষপ ছিলো না। এ বিষয়ে অভিযোগ দু:খজনক। এটা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা। ’

তিনি বলেন, ‘সিমেন্সের সঙ্গে কোকোর লেনদেন বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টে মামলা হয়। এফবিআই তদন্ত করে সকল তথ্য তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুদককে দেয়। তাই এ মামলা এ সরকারের সময়কার নয়। এটা দুদকের মামলা। ‘

তিনি বলেন, ‘এটা দু:খজনক যে, একজন মুক্তিযোদ্ধা সাবেক রাষ্ট্রপতি (জিয়াউর রহমান) ও দুই দুই বারের প্রধানমন্ত্রীর (খালেদা জিয়া) ছেলে দুর্নীতির রায়ে অভিযুক্ত হয়ে আদালতের রায়ে দণ্ডিত হয়েছেন। এটা জিয়া ও খালেদার পরিবারসহ কারো জন্য সুখবর হতে পারে না। এটা নিয়ে রাজনীতি করার কোনও সুযোগ নেই। ’

সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বিচারিক আদালতে এ মামলার রায় হয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হবো- যদি উচ্চ আদালতের রায়ে কোকো নির্দোষ প্রমাণ হয়ে আসেন। ’

তিনি বলেন, ‘এই রায় সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। হাওয়া ভবন তারেক-কোকো বানায়নি। হাওয়া ভবন করেছিলেন খালেদা জিয়া। সেটি ছিলো চেয়ারপারসনের কার্যালয়। সেই হাওয়া ভবন ছিলো সকল দুর্নীতি, লুটপাট ও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। ’

মিশরের হোসনি মোবারক ও লিবিয়ার গাদ্দাফি পরিবারের দুর্নীতি ও লুটপাটের কথা উল্লেখ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘ক্ষমতায় কেউ ৫০ বছর থাকুক আর যতো বছরই থাকুক, লুটপাট করলে তা একদিন প্রকাশ হবেই। কথায় আছে পাপ কখনো বাপকে ছাড়ে না। ’

তিনি বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিলো। আমরা দলের ৬২ বছরের রাজনৈতিক ঐতিহ্য মিডিয়াতে বিশদভাবে উঠে আসবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু মিডিয়াতে দুর্নীতির অভিযোগে কোকোর দণ্ডিত হওয়ার খবর প্রধান হয়েছে। যদি সরকারের কোনও হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকতো তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খবরকে প্রধান করতে আমরা বলতে পারতাম- তিন দিন আগে বা তিন দিন পরে রায় দেওয়া হোক। ’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে বিচার কাজে হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ বিএনপি করেছে তা ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও দু:খজনক। কোকোর দণ্ডিত হওয়ার রায় আমাদের জন্য, জাতির জন্য দু:খজনক। ’

তিনি বলেন, ‘রায় নিয়ে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করার কোনও সুযোগ নেই। আমি একজন কন্যা সন্তানের পিতা। আমার কন্যার বিরুদ্ধে যদি এরকম অভিযোগ উঠতো  এবং দণ্ডিত হতো তাহলে আমি আর মাথা সোজা করে কথা বলতে পারতাম না। আমরা যারা রাজনীতি করি, সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকি। নিজেদের ত্যাগী বলে দাবি করি তাদের সবারই নিজ নিজ সন্তানের ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। ’

সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, ‘যদি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া তাদের সন্তানদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতেন, মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে পারতেন তাহলে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার অবতারণা হতো না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।