ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

জনগণ খালেদা জিয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
জনগণ খালেদা জিয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছে মাহবুব উল আলম হানিফ

ঢাকা: আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমা হামলা করে মানুষ পুড়িয়ে মারায় এবং বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করায় পৌরসভা নির্বাচনে জনগণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পৌরসভা নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ সম্মেলন করার পর এ সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ।

হানিফ বলেন, এ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বৈধতা দিয়েছে। কারণ তারা এতোদিন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে মানতো না।

তিনি নির্বাচনের ফলাফলের বিষয়ে বলেন, খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে আগুনে পুড়ে পেট্রোল বোমা সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছেন। সেটা জনগণ ভালোভাবে নেয়নি। তিনি বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। এর মাধ্যমে একজন পাকিস্তানি হিসেবে প্রমাণ করেছেন নিজেকে। এমন মনোভাবের খালেদা জিয়াকে জনগণ এবারের পৌর নির্বাচনে প্রত্যাখ্যান করেছে।

নির্বাচনে দু’একটি ছোটখাট বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে স্বীকার করে ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, নির্বাচনী ইতিহাস ঘাঁটলে এর চেয়ে বেশি সহিংসতার খবর দেখা যায়। গতকাল (বুধবার ৩০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। তিনি কিন্তু দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। বিএনপি এ ধরনের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জড়িয়ে রং দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু গতকাল কী হয়েছে জনগণ তা দেখেছে।

নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া অবস্থানের প্রশংসা করে হানিফ বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে ছিল। তাদের দৃঢ় অবস্থানের কারণে আমাদের কিছু নেতাকর্মীও আহত হয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছে বিধায় তারা প্রশংসা পেতে পারে।

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যাচার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, কিছু কিছু জায়গায় আমাদের দলের প্রার্থীরা মাত্র ১৩-১৪ ভোটে হেরেছেন। ভোটে কারচুপি হলে আমাদের প্রার্থীরা এ অল্প ব্যবধানে হারতেন না, জিতে জেতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফল যা হয়েছে, তা-ই মেনে নিয়েছে।

তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুলের সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন নিয়ে তার কথা শুনে মনে হয়েছে, তিনি কি বাংলাদেশে বাস করেন, নাকি আসমান থেকে এসেছেন। ইতিহাস ঘাঁটলে এর চেয়ে বেশি সহিংসতাও দেখা যায়। বিএনপির আমলের নির্বাচনের কথা না হয় বাদই দিলাম।

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, এর আগে জনগণ তাদের যে শিক্ষা দিয়েছে, এই শিক্ষার কথা যদি তাদের মনে থাকে, তাহলে আর আন্দোলনের কথা বলবে না। তাছাড়া বিএনপির আন্দোলনের শক্তি নেই। তারা এখন মেরুদণ্ডহীন দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপি এখন একটি মাজা ভাঙা দল।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে হানিফ বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের সময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আছে, সেটাই করা হবে। দলের সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, উপ-প্রচার সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, এনামুল হক শামীম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫/আপডেট ১৪২০ ঘণ্টা
এসকে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।