ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ডিসিসি নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধকেই কারণ ভাবছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১১
ডিসিসি নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধকেই কারণ ভাবছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা

ঢাকা: ঢাকা সিটি কর্পোরেশন(ডিসিসি) নির্বাচনে কমিশনার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা কাজী আবদুর রহমান খুন হয়েছেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবার, দলীয় নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় জনগণ। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।



তবে খুনিরা কি নিজ দলীয় না প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের তা কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না।

এদিকে আবদুর রহমান খুনের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মজিবুর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামি করা হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) ৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রহমান নিহত হওয়ার পর শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

পরে পরিবার ও দলীয় নেতা-কর্মীরা তার লাশ পূর্ব তেজতুরি বাজার এলকার নিজ বাড়ির সামনে নিয়ে যান।

এ সময় খুনের ব্যাপারে মহিলা দলের মহানগর নেত্রী ও ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কমিশনার রোকেয়া সুলতানা তামান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ হত্যার পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। নিহত রহমান আগামী ডিসিসি নির্বাচনে বিএনপি থেকে কমিশনার প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। আর এ জন্যই প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা তাকে খুন করতে পারে। ’

প্রতিপক্ষ কি নিজ দলের না অন্য রাজনৈতিক দলের- এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে  তিনি বলেন, ‘নিজ দলের কারো সঙ্গে তার কোন ধরনের বিরোধ ছিল না। সবার সাথেই ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।

স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে স্ত্রী সাথী বলেন, ‘আবদুর রহমানের সঙ্গে কারো বিরোধ ছিল না। যারা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে, তাদের বিচার চাই’। খুনের প্রায় ২ ঘণ্টা আগে তার সঙ্গে আবদুর রহমানের কথা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

বিএনপি নেতা খুন ও পরবর্তীতে মামলার ব্যাপারে শুক্রবার তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ খুনের পিছনে রাজনৈতিক বিরোধ, টাকা-পয়সা লেনদেন, ডিসিসি নির্বাচনসহ একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে তদন্ত না করে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ’

তবে এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার থেকেই এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অপর দুইজন এবং ঘটনার সময় উপস্থিত নিহতের কয়েক বন্ধু ও স্থানীয় জনগণকে পুলিশ ও র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানিয়েছেন ওসি ও র‌্যাব ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এরশাদ।

খুনের ঘটনা নিয়ে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিবহন ব্যবসা নিয়ে কাভার্ড ভ্যান সমিতির কয়েক নেতার সঙ্গে বিরোধের জের ধরেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে সমিতির কাদের সঙ্গে বিরোধ তা সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি ।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ ও র‌্যাবের সাথে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখান থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন।

দুপুরে নিহতের লাশ তার বাড়ির সামনে নেওয়া হলে পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতা-কর্মীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

এলাকাবাসী খুনের ঘটনা নিয়ে বেশি কিছু বলতে না চাইলেও এর পিছনে ডিসিসি নির্বাচনকেই মনে করছেন। এ ঘটনার পর থেকে তেজতুরী বাজার এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিহত বিএনপি নেতার লাশ দু’দফা জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে ফার্মগেট এলাকার পূর্ব তেজতুরী বাজারে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রহমান।

বাংলাদেশ সময় ১৭২০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।