ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

নিজামী-মুজাহিদদের সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১০
নিজামী-মুজাহিদদের সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে

ঢাকা: ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের চার নেতাকে। এ উপলক্ষে আদালত এলাকায় নিশ্চিদ্র  নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।



জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লাকে সকাল ১০টায় আদালতে আনা হবে বলে সূত্র জানায়।

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের শীর্ষ চার নেতার বিরুদ্ধে গত ২৬ জুলাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সেদিন ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপুর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ২ আগস্ট মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।  

এছাড়াও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ব্যাপারে অগ্রগতি জানিয়ে ডিএমপি কমিশনারকে প্রতিবেদন পেশ করতেও বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শাহিনুর ইসলাম গেপ্তারি পরোয়ানা কতোটুকু কার্যকর হয়েছে তা ডিএমপি কমিশনারের কাছে জানতে চান।

ডিএমপি কমিশনার ট্রাইব্যুনালকে সেদিনই জানান, ‘এই চার জামায়াত নেতা এরই মধ্যে কারাগারে রয়েছেন, তাই তাদের আর গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন নেই। ’

এরপর ট্রাইব্যুনাল ২ আগস্ট এই চার নেতাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।    

গত ২৬ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারিক কাজ শুরুর দিনে গোলাম আরিফ টিপু শুনানিতে বলেন, ‘এ চার নেতাসহ তাদের দোসররা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সংঘটিত বর্বরতম ঘটনায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিল। তারা বাঙালি নিধনের উল্লাসে মেতে উঠেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী এ চক্র পুরো নয় মাস ধরে দেশের আনাচে-কানাচে হত্যাযজ্ঞ চালায় । আজ সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, তারা মুক্ত থাকলে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করবে। এ বিচার প্রক্রিয়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের আটকাদেশের অনুমতি প্রয়োজন। ’

বিচারপতিদের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম আরিফ টিপু সেদিন আরও বলেন, ‘১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২) ধারায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা জ্বালিয়ে দেওয়া, ধ্বংস করা, ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হলো। এসব কাজে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। ’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ০১/২০১০ নম্বর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার আটকাদেশ চাওয়া হয়।

এদিকে, রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো শাহিনুর ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, সোমবার নির্ধারিত সময়েই শুনানি শুরু হবে। তবে জামায়াতের নেতাদের পক্ষে তাদেরকে আইনী সহায়তা দিতে এখন পর্যন্ত কোন আইনজীবী তার কাছে আবেদন করেননি।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী জামায়াতের অপর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সর্ম্পকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে এখনো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কোনো অভিযোগ আসেনি। এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই কেবল তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’

এদিকে, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হাজিরা উপলক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংলগ্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রমনা জোনের পেট্রোল ইন্সপেক্টর ইমানুন ইসলাম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘সোমবার পুরো আদালত চত্বর নিñিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। ’

তিনি বলেন, পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে সেখানে সক্রিয় থাকবেন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরাও।
 
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২০১০ ঘণ্টা, অগাস্ট ১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।