ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

খালেদার সাক্ষাৎ না পেয়ে সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ

সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১১

লন্ডন : লন্ডন ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পথে রওয়ানা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া। শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় ভার্জিন এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর ছেড়ে যান বাংলাদেশের  সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।



কিন্তু সফরের পুরো সময়টায় সাংবাদিকরা একটিবারও খালেদার সাক্ষাৎ পাননি।   যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতারা বার বার সাংবাদিকদের তালিকা নিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাংবাদিকদের আলাদা কোনও বৈঠকের ব্যবস্থা না করায় বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ। বিরোধী দলীয় নেত্রীর সফরের শেষদিন শুক্রবার পর্যন্ত সাংবাদিকরা অপেক্ষা করেছেন আমন্ত্রণের। যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেতারাও চেষ্টা হচ্ছে বলে বারবার আশ্বাস দিয়েছেন সাংবাদিকদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক না করেই সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লন্ডন ত্যাগ করেন।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যুক্তরাজ্য বিএনপি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে  কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি।

এ বিষয়ে বাংলানিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তাহিক ‘সুরমা’র প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ বলেন, ‘আসলে আমার ধারণা বিরোধী দলীয় নেত্রী ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়ার বর্তমান উজ্জ্বল অবস্থান অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা এখানকার বাংলা মিডিয়াকে অবজ্ঞা করছেন। ’

প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপি’র তো বাংলা মিডিয়ার অবস্থান না জানার কথা নয়? তারাও নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে নেত্রীর কাছাকাছি যেতে ব্যর্থ হয়েছেন। ’

বেলাল বলেন, ‘আমরা সংবাদকর্মীরা নিরপেক্ষভাবে সব সংবাদই পাঠকের হাতে পৌঁছাতে চাই। আর এজন্যেই খবরের খোঁজে, রাজনীতিকদের সাথে আমাদের এমন সাক্ষাতের  চেষ্টা। কিন্তু রাজনীতিকদের কথা যদি তারা মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌছাতে না চান তাহলে আমাদের আর করার কিইবা থাকে!’

এ প্রসঙ্গে প্রেসক্লাব সভাপতি নিকট অতীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের সময়েও সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ না দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

ব্রিটেনের প্রাচীনতম বাংলা সাপ্তাহিক ‘জনমত’ এর সম্পাদক নবাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ব্রিটেন শাখার নেতারা কতটুকু নিজেদের নেতানেত্রীর কাছে ভিড়তে পারেন বিরোধী দলীয় নেত্রীর সাথে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ আদায়ে ব্যর্থতার বিষয়টি তাই আমাদের চোখে আঙল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে, বিভিন্ন সময় সামরিক শাসন বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সব খবরা খবর ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়াই মূলত বিশ্বব্যাপী প্রচার করতে মূল ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আমাদের রাজনীতিকরা বিশেষ করে বড় দুই দলের শীর্ষ নেতারা ব্রিটেনে এসে বারবারই বাংলামিডিয়াকে করেছেন উপেক্ষা। নেতা নেত্রীদের অনেক দুর্বল কর্মকান্ড প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়েই হয়তো তারা সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হতে চান না।

উল্লেখ্য, গত জানুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের সময়ও স্থানীয় বাংলা মিডিয়ার সাথে বৈঠক নিয়ে শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছিল। ঐ সময় দুই দুই বার সাক্ষাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। তৃতীয়বার সাক্ষাৎ সময়সূচি দিলেও সাংবাদিকরা শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে উপস্থিত হতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অবশ্য পরে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, আসলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাংবাদিকদের সাক্ষাতের বিষয়টি তিনি নিজে জানতেন না।

অনেকেই মনে করেন এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন চিফ প্রটোকল অফিসারকে দেশে যাওয়ার পর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে লন্ডনের সাংবাদিকদের সিডিউল বিপর্যয়ের জন্যে চীফ প্রটোকল অফিসার যদি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান, তাহলে বিরোধী দলীয় নেত্রীর সাথে সাক্ষাতের শিডিউল বিপর্যয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কি সিদ্ধান্ত নেন এটিই এখন দেখতে চান লন্ডনের সাংবাদিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ঘণ্টা, মে ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।