ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সাহস থাকলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন: খালেদা জিয়া

আসাদ জামান/আবুল হোসেন/মনোয়ারুল ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, মে ১, ২০১১
সাহস থাকলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন: খালেদা জিয়া

গাজীপুর: সরকারের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সাহস থাকলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন, জনগণ আপনাদের চায়। ’

মহান মে দিবস উপলক্ষে রোববার বিকেলে গাজীপুরের কোনাবাড়ী কলেজ মাঠে গাজীপুর জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।



খালেদা জিয়া বলেন, ‘কিন্তু আমরা জানি আপনাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। তাই মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার সাহস আপনার পাবেন না।

তিনি বলেন, ‘সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএনপি মেনে নেবে না। একই সঙ্গে দলীয় লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করলে সেটিও মানবে না বিএনপি। ’

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দালাল। তারা বিএনপিকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল। এ নির্বাচন কমিশনকে বিদায় নিতে হবে। একই সঙ্গে একটি নতুন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ’

বর্তমান সরকার নির্বাচনের আগে যেসব ওয়াদা করেছিল তার একটিও পূরণ করেনি বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।  

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার আগে বর্তমান সরকার ১০ টাকা কেজি দরে চাল, ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্ত  চালের দাম এখন ৫০ টাকা। ’

ঘরে ঘরে চাকরির পরিবর্তে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণে দিন দিন বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। সন্ত্রাস ও দুর্নীতির কারণে দেশের খারাপ ইমেজ তৈরি হচ্ছে। তাই নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে বেকারত্ব বাড়ছে। ’

তিনি বলেন, ‘দেশে আজ কোনো সংবিধান নেই। সরকার সংবিধান পরিপন্থী কাজ করে চলেছে। পার্লামেন্টেকে করে রেখেছে অকার্যকর। ’

সরকার বিদেশিদের দাসত্ব করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই ফেলানীর কথা শুনেছেন। একটি ছোট মেয়েকে কিভাবে গুলি করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার একটি প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি। ’

‌এ সরকার প্রতিপদে ব্যর্থ` বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন ‘এ সরকার  সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। তারা শুধু একটি জায়গায় সফল হয়েছে। সেটি হলো লুটপাট। ’

শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার শেয়ারবাজার থেকে টাকা লুটপাট করেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখন অর্থমন্ত্রী বলছেন- লুটপাটের সাথে যারা জড়িত তারা অনেক উঁচু মাপের লোক। তাদের কিছু বলা যাবে না। আমি তাদের নাম প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। ’

সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর, খনিজ সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই এ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ সরকারকে আরও সময় দিলে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানো যাবে না। ’

গাজীপুর জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সালাহউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য  আসম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, ছত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ গাজীপুর জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।