ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর রুসমত শনিবার বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী’র ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্পর্কে বিবৃতি প্রদান করেছেন।
‘আমরা লক্ষ্য করলাম বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
‘অথচ বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাথে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর একীভূত হওয়ার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বহিষ্কৃতরা আজ সংবাদ সম্মেলন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে। ’
‘বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর পক্ষে আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের দায়ে বহিস্কৃত অংশের কোনো ধারার সাথে আদর্শিক সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কোনো ধরনের ঐক্য হয়নি, হতে পারে না। এ বিষয়ে সকল বিভ্রান্তি মুক্ত হয়ে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের জন্য আমরা গণমাধ্যম বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ’
এ সম্পর্কে আমরা ছাত্র মৈত্রীর ঐক্য, সংগ্রাম, গৌরব ও ঐতিহ্যের ইতিহাস সংক্ষেপে উল্লেখ করতে চাই:
১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে সে বছর ২৬ এপ্রিল এই ভূখণ্ডের প্রগতিশীল ছাত্রসমাজের সংগ্রামের হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন’ এর সংগ্রামী উত্তরসূরী বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। ষাটের দশকে পিকিংপন্থী (মেনন গ্রুপ) এবং মস্কোপন্থী (মতিয়া গ্রুপ) নামে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন বিভক্ত হয়।
পরবর্তীতে মেনন গ্রুপের বহুধাবিভক্ত অংশগুলোর মধ্যে জাতীয় ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় ছাত্রদলের দুই অংশ এবং বাংলা ছাত্র ইউনিয়ন- এই চারটি অংশের ঐতিহাসিক ঐক্যের মধ্য দিয়ে ১৯৮০ সালের ৬ ডিসেম্বর বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে বহু সংগঠনের ঐক্যের ফসল এই বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাথে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের ঐক্যের মধ্য দিয়ে ১৯৮৭ সালের ৭-৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনের নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী’।
সেই থেকে আজ পর্যন্ত সংগঠনটি বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী নামেই তার আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করে আসছে। সংগঠনের মধ্যকার কিছু শৃংখলা ভঙ্গকারীকে ১৯৯৫ সালে বহিষ্কার করা হলে তারা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী নামে আরেকটি সংগঠন গড়ে তোলে।
‘সম্প্রতি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী থেকে শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অনুপ কুমার কুণ্ডু এবং রাজনৈতিক শিক্ষা সম্পাদক মাসুদুর রহমান পিটুকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক অনিন্দ্য আরিফকে মাদকাসক্তি ও নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। বহিস্ষ্কৃত ওই তিন জন ছাত্র মৈত্রী (পুনর্গঠিত) নামে বিচ্ছিন্ন কিছু কার্যক্রম চালায়, যদিও ঢাকায় ব্যানার সর্বস্ব সংগঠন ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ বাংলাদেশের কোথাও তাদের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। তারা অন্য নামে সংগঠন পরিচালনা করলেও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর ঐক্য ও সংহতির বিন্দুমাত্র কোনো ক্ষতি এ যাবৎকালে হয়নি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১১