ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সংবিধান সংশোধন নিয়ে সরকার চরম হঠকারিতা করছে: মওদুদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১১
সংবিধান সংশোধন নিয়ে সরকার চরম হঠকারিতা করছে: মওদুদ

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘সরকার সংবিধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেভাবে এগুচ্ছে তা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় ও হঠকারিতার শামিল। ’

সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।



এ সময় সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটির চেয়ারপারসন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পাঠানো চিঠির জবাবে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার দেওয়া চিঠি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন মওদুদ।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থি ছিলেন।

সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটির বৈঠকে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মওদুদ বলেন, ‘সুপ্রীম কোর্টের ৫ম সংশোধনীর রায় আমরা দলীয়ভাবে মানি না। উপরন্তু সংবিধান সংশোধনের নামে সরকার একদলীয় বাকশাল কায়েমের ষড়যন্ত্র করছে। তাই সংবিধান সংশোধনের আলোচনায় অংশ নেইনি আমরা। ’  

মওদুদ বলেন, ‘একদিকে সংসদকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান পুনর্মুদ্রণ, অন্যদিকে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা সাংঘর্ষিক। এ অবস্থায় বিএনপি মনে করছে- এই আলোচনা একটি প্রহসন। সেজন্যই ওই কমিটির বৈঠকে যায়নি। ’
 
সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের বক্তব্যের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘চিঠির ভাষাতো আপনারা দেখলেন-এতে অসৌজন্যমূলক কিছু পেয়েছেন কি? জনগণ যখন এটা দেখবে তখন বুঝবে যে আমরা শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কিছু  লেখিনি। ’

সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে সরকারের সঠিক অবস্থান কি তা দেশের মানুষ এখনো জানে না বলে অভিযোগ করে মওদুদ বলেন,  ‘সরকার যে প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধনের চেষ্টা করছে তা আমাদের দলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ’

তিনি বলেন, ‘আর একটা হঠকারিতা হলো- যখন এই বিশেষ কমিটির কাজ চলছে তখন তারা (সরকার) সুপ্রিম কোর্টে দুটি রিভিউ পিটিশন দিয়েছে আদালতে রায় পরিবর্তনের জন্য। ’

আদালতের চূড়ান্ত রায়ের আগেই এমন উদ্যোগ ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন মওদুদ।  

তিনি বলেন, ‘৯ মাস আগে এই বিশেষ কমিটি গঠন হয়েছে। এই কমিটি থাকাকালে একই সরকারের আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধান গেজেট করে ছাপিয়ে দিয়েছে। আগে যেভাবে সংবিধান ছাপা হয় ঠিক সেভাবেই ৫শ’ কপি ছাপানো হয়। কিন্তু এগুলো এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। ’

পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘কাগজে দেখলাম সংবিধান গায়েব হয়ে গেছে। এটাই যদি সংবিধান হয়ে থাকে আর আইনমন্ত্রী যদি সত্যি বলে থাকেন- তাহলে এই বিশেষ কমিটি কি কাজ করবে?’

সংবিধান সংশোধন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী একেক সময় একেক কথা বলেছেন বলেও অভিযোগ করেন মওদুদ।

তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার কোথাও এমন উদাহরণ নেই। সংবিধান নিয়ে একটা আলোচনা করবেন- অথচ এর একটা কার্যপত্র পর্যন্ত নেই। কি কি পরিবর্তন আনতে চান সেগুলোও সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের জানাবেন না। অথচ আমরা একটা রাজনৈতিক দল- কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করি। ’

এক প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন করে পুনর্মুদ্রণ করে ফেলেছে। কিন্তু সরকার এখনো বলেনি- খসড়াটা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ’

‘একতরফাভাবে সংবিধান সংশোধন জবাবে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কি করবেন’- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তখন দেখা যাবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।