ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

খোকা-কাইউমের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি শিগগিরই

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১১
খোকা-কাইউমের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি শিগগিরই

ঢাকা: দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি শিগগিরই ঘোষণা করা হচ্ছে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৯ মে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সামনে রেখে মহানগর কমিটি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।



সূত্রমতে, ঢাকার মেয়র ও বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক ও কমিশনার এমএ কাইউমকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের কমিটি হচ্ছে।

সংগঠন শক্তিশালী করতে নগরীর উত্তর ও দক্ষিণ থেকে দুই প্রভাবশালী নেতাকে সামনের কাতারে রাখা হচ্ছে। এছাড়াও কমিটিতে স্থান পাবেন নগরীর বিভিন্ন আসনে ২০০৮ সালের এমপি প্রার্থী, সাবেক ও বর্তমান কমিশনারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী আইনজীবী।

এই কমিটির মেয়াদ হতে পারে ৩ মাস। এই ৩ মাসের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও কমিশনার কাইউম ছাড়াও যাদের নাম সম্ভাব্য কমিটিতে রয়েছে তারা হলেন- বিএনপির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুুস সালাম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএ খালেক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আহসান উল্লাহ হাসান, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার কাজী আবুল বাশার ও  ৫১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আব্দুল লতিফ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ মাসে কমিটি ঘোষণা হচ্ছে কি না জানি না। তবে দ্রুত মহানগর কমিটি ঘোষণা দেওয়া উচিত। ’

তিনি বলেন, ‘সামনে আন্দোলন চাঙ্গা করতে হলে মহানগর কমিটির অনেক বড় ভূমিকা থাকবে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আন্দোলন সংগ্রামের কথা ভেবেই কমিটি ঘোষণা দিতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। ’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর কমিটি যত তাড়তাড়ি হবে ততই নগরীর আন্দোলন সংগ্রামের জন্য ভালো। ’

তিনি বলেন, ‘কবে নাগাদ কমিটি ঘোষণা করা হবে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।   তবে খুব শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে। ’

সাদেক হোসেন খোকা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণা দেওয়ার কথা অনেক আগেই শুনছি। কবে ঘোষণা করা হবে জানি না। ’

তিনি বলেন, ‘কমিটি ঘোষণার বিষয়টি চেয়ারপারসন যখন চাইবেন তখনই হবে। ’
 
আপনি আবারও মহানগর কমিটির সভাপতি হচ্ছেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। ’
 
এদিকে গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রায় সব প্রার্থীকে সম্ভাব্য আহ্বায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেলসহ কয়েকজনের ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

আপত্তিতে বলা হয়েছে, তারা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দুই সহযোগী সংগঠনের প্রধান পদে রয়েছেন। তাদের নিজ নিজ সংগঠনকেই আরো শক্তিশালী করার স্বার্থে অতিরিক্ত দায়িত্ব না  দেওয়াই ভালো।

তবে এ বিষয়ে দলের ভেতরই দ্বিমত রয়েছে। কেননা তারা কমিটিতে না থাকলে নির্বাচনী এলাকা গুছিয়ে নিতে নানা সমস্যায় মুখে পড়তে হবে।  

দলীয় সূত্র জানায়, সরকার বিরোধী আন্দোলন বেগবান করতে ঢাকা মহনগর কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গত মার্চ মাসের শুরুতেই কয়েক দফা বৈঠক করেন সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে। নগর কমিটি নিয়ে বিরোধে লিপ্ত দলের প্রভাবশালী দুই নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসণেরও চেষ্টা করেন। দু’জনের কাছেই নগর কমিটির সম্ভাব্য নেতাদের তালিকা চান।

এর জবাবে নগর বিএনপির অভিভাবক হিসেবে দলের নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদের নাম প্রস্তাব করেন মির্জা আব্বাস। আর তাতে সমর্থন জানান তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও তার অনুসারীরা।

কিন্তু মির্জা আব্বাসের ওই প্রস্তাব আমলে নেননি খালেদা জিয়া। সার্বিক বিবেচনায় সাদেক হোসেন খোকাকেই আহবায়ক করে কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এজন্য ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির চারজনকে দায়িত্ব দেন। উভয় পক্ষে গ্রহণযোগ্য, জনপ্রিয় ও রাজনীতিতে পরিচিত মুখ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পরামর্শও দেন বিএনপিপ্রধান।

এদিকে ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারপন্থি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন কমিটি ২০০৮ সালের মাঝামাঝিতে ভেঙে দেওয়া হয়। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তখন কারাবন্দি ছিলেন। এরপর আর মহানগর কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার দ্বন্দ্বকেই এর প্রধান কারণ মনে করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।